গাজ়িয়াবাদ সীমানায় আন্দোলনরত কৃষক। পিটিআইয়ের ফাইল ছবি
আন্দোলনকারী কৃষকেরা দিল্লির বাইরে যে ভাবে টানা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন, বৃহস্পতিবার তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতিরা জানতে চান, সরকার করছেটা কী? কেন্দ্রীয় সরকারকে আদালত নির্দেশ দিয়েছে, অবরোধ তোলার জন্য কৃষকদের কাছে নতুন ভাবে আবেদন জানাতে হবে। এ দিকে হরিয়ানায় ফের আন্দোলনকারী কৃষকদের সঙ্গে পুলিশের এক দফা সংঘর্ষ হয়েছে। কারনালে এই ঘটনায় কয়েক জন কৃষক আহত হয়েছেন। ভিড়ের চাপে পুলিশের তৈরি ব্যারিকেড ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।
সড়ক অবরোধ তুলে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে নয়ডার বাসিন্দা মনিকা আগরওয়াল সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। আবেদনে তিনি বলেন, আগে যেখানে ২০ মিনিয়ে তিনি দিল্লি পৌঁছতেন, অবরোধের কারণে সেই পথে তাঁর দু’ঘণ্টার বেশি সময় লাগছে। সেই আবেদনের শুনানির সময়ে বিচারপতি সঞ্জয়কিষাণ কাউল এবং বিচারপতি এম এম সুন্দরেশ বলেন, “ক্ষোভ থাকলে আদালতে আসা যেতে পারে, সংসদে তা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু এই ভাবে লাগাতর রাস্তা অবরোধ তো চলতে পারে না!” বিচারপতিরা মন্তব্য করেন, আইনকে কার্যকর করে সড়ক অবরোধ তোলাটা প্রশাসনের কাজ। অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কে এম নটরাজকে বিচারপতিরা প্রশ্ন করেন, এ বিষয়ে কী করছে সরকার? মানুষ যে বিপাকে পড়ছেন, সে বিষয়ে সরকারের কোনও ভাবনা-চিন্তা আছে? নটরাজন বলেন, আন্দোলনকারী কৃষকদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছে সরকার। সেখানে কী কী কথা হয়েছে, সে সব হলফনামায় জানানো হয়েছে। বিচারপতিরা বলেন, “আমরা একটা নির্দেশ দিতে পারি, কিন্তু সেটা বাস্তবায়ন তো প্রশাসনকে করতে হবে। সেই দায়িত্ব তাদেরই নিতে হবে!”
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতে বলেন, “সেই দায়িত্ব অবশ্যই সরকারের। বিচারপতিরা কোনও নির্দেশ দিতে চাইলে দিতে পারেন। প্রশাসন অবশ্যই তা বাস্তবায়ন করবে।” এর পরে বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, অবরোধ তোলার জন্য যেন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নতুন করে আলোচনা প্রক্রিয়া শুরু করে প্রশাসন। এই দিনই আবার রাজস্থানের এক দল আন্দোলনকারী কৃষক দিল্লির যন্তর মন্তরে বিক্ষোভ দেখাতে চেয়ে আদালতে গিয়েছেন। তাঁদের দাবি, কেন কৃষকদের রাজধানীর বাইরে আটকে রাখা হবে? কেন কৃষকেরা রাজধানীতে গিয়ে নিজেদের ক্ষোভের কথা সরকারের কানে তুলতে পারবে না? যন্তর মন্তরে সবাই অবস্থান আন্দোলন করেন। কৃষকদের কেন সেখানে যেতে দেবে না সরকার?
হরিয়ানার কারনালে কৃষকদের জমায়েত ও বিক্ষোভে বাধা দেওয়ার জন্য এ দিন পুলিশ ব্যারিকেড তৈরি করেছিল। কিন্তু কৃষকদের ভিড় এমন মাত্রা নেয়, সেই ব্যারিকেড চুরমার হয়ে যায়। ধাক্কা খেয়ে পুলিশ মারমুখী হয়ে উঠলে কৃষকদের সঙ্গে তাদের মারপিট লেগে যায়। কয়েক জন পুলিশ ও কৃষক চখম হন। পরে অবশ্য পরিস্থিতি আরও খারাপ দিকে মোড় নেয়নি।