সৌরভ ভরদ্বাজ। —ফাইল চিত্র।
অন্তরালে ছিলেন। স্বামী গ্রেফতার হওয়ার পরে তাঁর কণ্ঠস্বর হয়ে নিয়মিত প্রকাশ্যে আসছেন অরবিন্দ কেজরীওয়ালের স্ত্রী সুনীতা। এ বার আপের মন্ত্রী সৌরভ ভরদ্বাজ বলেই দিলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আপকে এককাট্টা রাখার ক্ষেত্রে যোগ্য ব্যক্তিত্ব সুনীতাই।
আবগারি দুর্নীতি মামলায় ধৃত কেজরীওয়াল বন্দি অবস্থাতেই এখনও পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রিত্ব সামলে যাচ্ছেন। দল ও স্বামীর মধ্যে সংযোগরক্ষাকারী হিসেবে কাজ করছেন সুনীতা। জনতার উদ্দেশে কেজরীওয়ালের নানা বার্তা তিনি যেমন নিজে ক্যামেরার সামনে পাঠ করছেন, তেমনই দলীয় কর্মীদের কাছেও আপ আহ্বায়কের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন। বিরোধীরা যদিও কেজরীওয়ালের ইস্তফা চেয়ে সরব। আর আপও বুঝতে পারছে, এ ভাবে দীর্ঘদিন চালানো অসম্ভব। পরবর্তী সময়ে কাউকে না কাউকে কেজরীর উত্তরসূরি বাছতেই হবে।
বিজেপি নেতাদের মতে, নতুন মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন ঘিরে আপে বিভাজন হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। বস্তুত, ইতিমধ্যেই সেই লড়াই শুরু হয়েছে এবং সাংসদ সঞ্জয় সিংহ জেল থেকে জামিনে ছাড়া পাওয়ার পরে রেষারেষি আরও তীব্র হয়েছে বলেই তাঁদের মত। আজ সৌরভ বলেন, ‘‘দলকে এই সময়ে ধরে রাখতে যোগ্য মানুষ হলেন সুনীতা কেজরীওয়াল।’’ বিজেপির একাংশের বক্তব্য, মূলত সঞ্জয়কে আটকাতেই এই মন্তব্য। সৌরভের যুক্তি, ‘‘কেজরীওয়ালের বক্তব্য দলীয় কর্মীদের কাছে পৌঁছে দিয়ে সুনীতা দূত হিসেবে কাজ করছেন। তা ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আমরা বিষয়টিকে নিয়ে প্রচারে নামতে চাই।’’ কেজরী জেলে যাওয়ায় আপের একাংশ সুনীতাকে দিয়ে ভোটের প্রচার চালানোরও পক্ষে। দলে বিভেদ নেই দাবি করে সৌরভ আরও বলেন, ‘‘জামিনে ছাড়া পেয়ে সঞ্জয় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি গিয়ে সুনীতা কেজরীওয়ালের পা ছুঁয়ে প্রণাম করেছিলেন। সঞ্জয় বড় দাদার মতো মানেন অরবিন্দকে। বিজেপির প্রচার ভিত্তিহীন।’’ এ দিকে সঞ্জয় আজ সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ তোলেন, আবগারি দুর্নীতিতে ফাঁসানো হয়েছে কেজরীওয়ালকে। তাঁর দাবি, রাঘব মাগুনটা নামে এক ব্যবসায়ী ওই দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার হন। গত বছর ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত রাঘব সাতটি বিবৃতি দেন। ছ’টিতে তিনি কেজরীওয়ালের নাম না নিলেও, সপ্তম বিবৃতিতে কেজরীওয়ালের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন। সঞ্জয়ের দাবি, পাঁচ মাস অত্যাচার সহ্য করার পরে ওই ব্যক্তি কেজরীওয়ালের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেন। এ দিকে, আবগারি দুর্নীতি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ খুলে সঞ্জয় জামিনের শর্ত ভেঙেছেন বলে দাবি বিজেপি নেতা গৌরব ভাটিয়ার।
গত কাল সুনীতা যখন তাঁর স্বামীর বিবৃতি পাঠ করছিলেন, তখন পিছনের দেওয়ালের দু’প্রান্তে ভগৎ সিংহ ও বি আর অম্বেডকরের ছবির মাঝখানে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের ছবি ঝুলতে দেখা যায়। সেই ছবির সামনে ছিল গারদ। এর প্রতিবাদ জানিয়ে ভগৎ সিংহের পরিবারের সদস্য যদবিন্দর সান্ধু বলেন, ‘‘কেজরীওয়ালকে মণীষীদের সঙ্গে তুলনা করার চেষ্টা করা হয়েছে। এমন যাতে না করা হয়, সেই পরামর্শই আমি আপ নেতৃত্বকে দিতে চাই।’’