cooking gas

ভর্তুকি আরও কমতে পারে রান্নার গ্যাসে

বছরে যে ১২টি সিলিন্ডারে ভর্তুকি মেলে, তা-ও প্রায় একই দামে কিনতে হবে। কারণ, রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি আরও কমতে পারে বলেই সরকারি সূত্রে ইঙ্গিত মিলছে।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৫:১৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম ৮০০ টাকা ছুঁতে চললেও ভর্তুকি বৃদ্ধির আশা কম। বছরে যে ১২টি সিলিন্ডারে ভর্তুকি মেলে, তা-ও প্রায় একই দামে কিনতে হবে। কারণ, রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি আরও কমতে পারে বলেই সরকারি সূত্রে ইঙ্গিত মিলছে।

Advertisement

আজ থেকে কলকাতায় ভর্তুকিহীন রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম বেড়ে ৭৯৫.৫০ টাকা হয়েছে। এত দিন দাম ছিল ৭৪৫.৫০ টাকা। কিন্তু তাতে ভর্তুকি মিলছিল ১৯.৫৭ টাকা। অর্থাৎ, খাতায়-কলমে ১২টি সিলিন্ডার ভর্তুকিতে মিললেও তার জন্য প্রায় ৭২৬ টাকা দাম দিতে হচ্ছিল। এ বার সিলিন্ডারের দাম ৫০ টাকা বাড়ার পরে ভর্তুকি কি বাড়বে?

সে গুড়ে বালি! সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, গত ১ ফেব্রুয়ারি বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন পেট্রোপণ্যে যে ভাবে ভর্তুকি ছাঁটাই করেছেন, তাতে ভর্তুকি বৃদ্ধির সম্ভাবনা তো নেই। উল্টে তা আরও কমতে পারে। ভর্তুকিহীন ও ভর্তুকিতে পাওয়া সিলিন্ডারের দাম প্রায় একই হয়ে যাবে। প্রায় ২৮ কোটি রান্নার গ্যাসের উপভোক্তার উপরে বাড়তি বোঝা চাপবে।

Advertisement

বাজেটে পেট্রোপণ্যে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ কমিয়ে তিন ভাগের এক ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। ২০২০-২১-এ পেট্রোপণ্যে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ হয়েছিল প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু সংশোধিত হিসেবে তা ছাঁটাই করে ৩৯ হাজার কোটি টাকার কম করে দেওয়া হয়েছে। আগামী অর্থ বছরে বরাদ্দ হয়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকারও কম। অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘এর মধ্যেও বেশ কিছুটা টাকা বিদায়ী অর্থ বছরের বকেয়া মেটাতে খরচ হবে। পেট্রল-ডিজেলের দাম সরকারি নিয়ন্ত্রণমুক্ত হওয়ার ফলে এখন শুধু রান্নার গ্যাস ও কেরোসিনেই ভর্তুকি দিতে হয়। গত বছর থেকেই ধাপে ধাপে রান্নার গ্যাস ও কেরোসিনের দাম বাড়িয়ে ভর্তুকি কমিয়ে আনা হয়েছে। আগামী অর্থ বছরেও ভর্তুকি কমানো হবে।’’ পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক সূত্রের খবর, ২০১৫-তে যখন রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেওয়া শুরু হয়েছিল, তখন প্রতি সিলিন্ডারে ৫৬৩ টাকা করে ভর্তুকি দেওয়া হত। এখন তা কমে ২০ টাকার নীচে
চলে এসেছে।

রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধিকে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্র করতে আজ কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী একে ‘জনতার থেকে লুট’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। সম্প্রতি মোদী সরকারকে ‘হম দো, হমারে দো’-র সরকার বলে তকমা রাহুলের বক্তব্য, শুধু দু’জনের উন্নতিই সরকারের লক্ষ্য। এআইসিসি সদর দফতরে কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে এ দিন গ্যাসের সিলিন্ডার সামনে রেখে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার প্রশ্ন, ‘‘এটাই কি অচ্ছে দিন?’’ তাঁর যুক্তি, গত ডিসেম্বর থেকে আড়াই মাসে রান্নার গ্যাসের দাম সিলিন্ডারে ১৭৫ টাকা বাড়ল। কংগ্রেসের পাশাপাশি কেন্দ্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলা ওড়িশার বিজু জনতা দলও এ দিন রান্নার গ্যাস, পেট্রল-ডিজেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিজেডি-র জাতীয় মুখপাত্র প্রসন্ন আচার্য বলেন, ‘‘যখন অশোধিত তেলের দাম বাড়ছে না, তখন এ দেশে জ্বালানির দাম কেন বাড়ছে? কেন্দ্রের উচিত সহানুভূতিশীল হওয়া।’’

কিছু দিন আগেই সংসদে তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান জানিয়েছেন, পেট্রল-ডিজেলে উৎপাদন শুল্ক কমিয়ে সাধারণ মানুষকে সুরাহা দেওয়ার পরিকল্পনা নেই। কংগ্রেস মুখপাত্রের অভিযোগ, মোদী জমানায় ১২ বারের বেশি উৎপাদন শুল্ক বেড়েছে। সরকার প্রায় ২৪ লক্ষ কোটি টাকা আয় করেছে। মনমোহন জমানার শেষে ডিজেলে সাড়ে তিন টাকা, পেট্রলে ৯ টাকা করে কর আদায় হত। এখন ডিজেলে ৩২ টাকা, পেট্রলে ৩৩ টাকা করে কর আদায় হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement