নিশানায়: বিজেপির আইটি শাখার প্রধান অমিত মালব্য।
তাঁর বিরুদ্ধে প্রচারে নামায় দলের তথ্য এবং প্রযুক্তি (আইটি) শাখার প্রধান অমিত মালব্যকে আগামিকালের মধ্যে পদ থেকে সরানোর দাবি তুললেন বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যন স্বামী। তাঁর টুইট, দলের সভাপতি জে পি নড্ডার কাছে তিনি কালকের মধ্যে মালব্যকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি করেছেন। যদি না হয়, তা হলে বুঝে নিতে হবে দল তাঁর পাশে নেই।
তবে নিজের দলের হাতে আক্রান্ত হওয়ার নজির বিজেপিতে স্বামী প্রথম নন, অতীতে বিদেশমন্ত্রী প্রয়াত সুষমা স্বরাজ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহও দলের আইটি শাখার আক্রমণের মুখে পড়েছিলেন।
গত সোমবার থেকেই বিজেপির আইটি সেলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন স্বামী। তাঁর অভিযোগ, দলের আইটি সেলের পক্ষ থেকে কিছু ভুয়ো অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লাগাতার ব্যক্তিগত আক্রমণ শানানো হচ্ছিল। সম্প্রতি দেশের খারাপ আর্থিক পরিস্থিতি থেকে জেইই ও নিটের পরীক্ষা— মোদী সরকারের একাধিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন স্বামী। বিশেষ করে করোনা অতিমারির মধ্যে নিট পরীক্ষা ফেলায় সরকারের সিদ্ধান্তের প্রকাশ্যে সমালোচনা করেন তিনি। সূত্রের মতে, তার পরেই বিজেপির আইটি সেল স্বামীকে আক্রমণ শানানো শুরু করে।
এর পর গত সোমবারই স্বামী টুইট করে বলেছিলেন, ‘‘বিজেপির আইটি শাখা খারাপ লোকে ভরে গিয়েছে। ওই শাখার কিছু ব্যক্তি ভুয়ো অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আমার প্রতি ব্যক্তিগত আক্রমণ করছে।’’ সূত্রের মতে, ওই ভুয়ো অ্যাকাউন্টগুলি থেকে বেশ কিছু পুরনো ভিডিয়ো আপলোড করে প্রচার করার চেষ্টা করা হয়, সুব্রহ্মণ্যন স্বামী রামমন্দির-বিরোধী।
বিজেপি সূত্রের মতে, আইটি শাখা অতীতেও সীমা লঙ্ঘন করে দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। ২০১৮ সালে ভিন্ন ধর্মে বিবাহিত এক দম্পতিকে পাসপোর্ট দফতরের এক অফিসার হেনস্থা করলে সেই অফিসারকে তিরস্কার করেছিলেন তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। কেন তিনি ভিন্ন ধর্মে বিয়েকে সমর্থন করছেন, সেই অজুহাতে তীব্র আক্রমণের মুখে পড়তে হয় সুষমাকে। তদন্তে অভিযোগের আঙুল উঠেছিল বিজেপির আইটি শাখার দিকে। একই ভাবে ২০১৭ সালে অমরনাথ যাত্রীদের উপর হামলার ঘটনায় তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ কাশ্মীরবাসী ও কাশ্মীরিয়তের প্রশংসা করে আইটি শাখার নিশানা হয়েছিলেন।
এ বারে সরকারের নীতির বিরুদ্ধে মুখ খোলায় আক্রমণের মুখে স্বামী। গত কয়েক দিন ধরে লাগাতার ওই আক্রমণ চালু থাকায় আজ সরাসরি আইটি শাখার প্রধান অমিত মালব্যকে এর জন্য দায়ী করেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে দলীয় সভাপতি জে পি নড্ডার সঙ্গে কথা বলে মালব্যকে কালকের মধ্যে ওই পদ থেকে সরানোর দাবি তোলেন। টুইট করে বলেন, ‘‘কালকের মধ্যে যদি মালব্যকে সরানো না হয়, তা হলে ধরে নিতে হবে দল আমার পিছনে নেই। দলের সমর্থকদের জনমত যাচাইয়ের কোনও সুযোগ না থাকায় আমায় নিজেকেই নিজে রক্ষা করতে হবে।’’
স্বামী ওই অভিযোগ তোলার পরে সর্বক্ষণ টুইটারে সক্রিয় থাকা মালব্য অবশ্য কিছু বলেননি। তাঁকে নড্ডা আইটি শাখার দায়িত্বে রেখে দেন কি না, সেটাই এখন দেখার।