বদলি হতেই আইএএস থেকে স্বেচ্ছাবসরের আবেদন করলেন সুভাষ গর্গ। —ফাইল চিত্র
অর্থ মন্ত্রকে তিনিই ছিলেন সবচেয়ে সিনিয়র। কিন্তু তাঁকেই অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকে সরিয়ে দেওয়ায় স্বেচ্ছাবসরের আবেদন করলেন সুভাষ চন্দ্র গর্গ। বুধবারই অর্থমন্ত্রকের সচিব থেকে সরিয়ে তাঁকে শক্তি মন্ত্রকে বদলির সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই স্বেচ্ছাবসরের আর্জি জানানোয় অস্বস্তিতে মোদী সরকার। ব্যক্তিগত আক্ষেপ থেকেই স্বেচ্ছাবসরের সিদ্ধান্ত বলে গর্গের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর। তবে শুক্রবার থেকে শক্তি মন্ত্রকে কাজে যোগ দিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন গর্গ।
সুভাষ গর্গের জায়গায় আনা হয়েছে ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের সচিব অতনু চক্রবর্তীকে। অন্য দিকে,টুইটারে স্বেচ্ছাবসরের আবেদনের কথা প্রকাশ্যে এনেছেন সুভাষ গর্গ নিজেও। বৃহস্পতিবার তিনি লিখেছেন, ‘‘অর্থ বিষয়ক দফতরের দায়িত্বভার হস্তান্তর করলাম। অর্থমন্ত্রক এবং অর্থ বিষয়ক দফতরে অনেক কিছু শিখেছি। আগামিকাল থেকেই শক্তি মন্ত্রকের দায়িত্ব নিচ্ছি। একই সঙ্গে ৩১ অক্টোবর আইএএস থেকে স্বেচ্ছাবসরের আবেদন জানিয়েছি।’’ তবে তাঁর এই স্বেচ্ছাবসরের আবেদন গ্রহণ করা হবে কি না, সে বিষয়ে এখনও কেন্দ্রের তরফে কোনও সিদ্ধান্ত জানা যায়নি।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকে সচিব পর্যায়ের পাঁচ জন আমলার মধ্যে সবচেয়ে প্রবীণ সুভাষ চন্দ্র গর্গ। ১৯৮৩ ব্যাচের রাজস্থান ক্যাডারের এই আইপিএস অফিসারআর্থিক নীতি নির্ধারণ, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। এ ছাড়া মোদী-২ সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট তৈরিতেও ছিল তাঁর সক্রিয় ভূমিকা। এ হেন গর্গকে আচমকাই বুধবার বিকেলের দিকে বদলির নির্দেশ জারি হয়। বুধবার সকালেও নর্থ ব্লকে অর্থ মন্ত্রকের কাজের তদারকি করেছেন তিনি। কিন্তু বিকেলের দিকে বদলির খবর পেয়েই দফতর ছাড়েন।
আরও পডু়ন: ‘আপনার চোখে চোখ রেখে কথা বলতে ইচ্ছে করে’, আজম খানের মন্তব্যে উত্তাল সংসদ
আরও পড়ুন: পরিকাঠামো নেই, দু’বার অস্ত্রোপচার সত্ত্বেও দুর্ঘটনায় কাটা পড়া হাত জুড়তে পারল না এমআর বাঙ্গুর
কর্মজীবনের আর বছরখানেক বাকি রয়েছে গর্গের। ২০২০ সালের অক্টোবরে ৬০ বছর বয়সে তাঁর চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার কথা। গর্গকে বদলি করে পাঠানো হয় শক্তি মন্ত্রকের সচিব হিসেবে। কিন্তু গুরুত্ব ও পদমর্যাদা অনুযায়ী অর্থ মন্ত্রকের চেয়ে অনেক কম গুরুত্বপূর্ণ শক্তি মন্ত্রক। গর্গের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে দাবি, কর্মজীবনের প্রায় অন্তিম লগ্নে এসে এই বদলি তাঁর কাছে কার্যত পদাবনতি। সেই কারণেই স্বেচ্ছাবসরের সিদ্ধান্ত।
২০১৪ সালে প্রথম দিল্লিতে বদলি হয়ে আসেন সুভাষ গর্গ। তাঁকে বিশ্ব ব্যাঙ্কের এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর করা হয়। তিন বছর কাজ করার পর ২০১৭-র জুনে তিনি অর্থ বিষয়ক সচিব পদে যোগ দেন। এর পর ২০১৮-র ডিসেম্বরে অর্থসচিব পদ থেকে হাসমুখ আঢ্য অবসর নেওয়ার পর তাঁর চেয়ারে বসেন সুভাষচন্দ্র গর্গ।