শুক্রবার বিকেলে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদর্শিত হচ্ছে মোদীর উপর তৈরি তথ্যচিত্র। ফাইল ছবি।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, জ়ামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার পর এ বার দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়। পড়ুয়াদের উদ্যোগে সেখানেও দেখানো হবে বিবিসির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপর তৈরি তথ্যচিত্র, ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’। শুক্রবার বিকেল পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জায়গায় এই তথ্যচিত্র দেখানো হবে। যা রুখতে মরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিতর্কিত এই তথ্যচিত্র প্রদর্শন ঘিরে পড়ুয়া এবং কর্তৃপক্ষের মধ্যে চাপান-উতোর চলছে। জেএনইউ-যাদবপুরের মতো প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়েও এই তথ্যচিত্র দেখানো হবে বলে ঘোষণা করেছে বাম ছাত্র সংগঠন। ২৭ জানুয়ারি, বিকেল ৪টের সময় মোদী এবং ২০০২ সালের গুজরাত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার প্রেক্ষাপটে তৈরি তথ্যচিত্রটি প্রদর্শনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি চাওয়া হয়েছে বলে খবর।
মোদীকে নিয়ে বিবিসির তৈরি তথ্যচিত্র সারা দেশে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে। সরকার এই তথ্যচিত্রের প্রদর্শন রুখতে মরিয়া। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক টুইটার, ইউটিউবের মতো সমাজমাধ্যম প্ল্যাটফর্মকে নির্দেশ দিয়েছে বিবিসির তথ্যচিত্র সরিয়ে ফেলতে। বিবিসির দাবি, এই তথ্যচিত্রে ২০০২-এর গুজরাত হিংসার ঘটনার সময়ের কিছু দিক নতুন করে তদন্ত করে দেখা হয়েছে। ঘটনাচক্রে, সেই সময় গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। যদিও বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, এই তথ্যচিত্র নির্দিষ্ট ‘উদ্দেশ্যে’ প্রচার পাওয়ার হাতিয়ার। তথ্যচিত্রটি একেবারেই ‘বস্তুনিষ্ঠ’ নয় এবং ‘ঔপনিবেশিক মনোভাবের’ প্রতিফলন।
কিন্তু কেন্দ্রের এই দাবি মানতে রাজি নয় বিরোধী দলগুলি। যে কোনও প্রকারে তথ্যচিত্র সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করলেও ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই তথ্যচিত্র দেখানো হচ্ছে। এই প্রতিবাদমূলক প্রদর্শনের পুরোভাগে রয়েছে পড়ুয়ারা। কিছু দিন আগেই জেএনইউতে এই তথ্যচিত্র প্রদর্শনের সময় আলো নিভিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গেই দর্শকদের উপর পাথরবৃষ্টিরও অভিযোগ ওঠে এবিভিপির বিরুদ্ধে। এ বার কর্তৃপক্ষের সরাসরি বিরোধিতা করে তথ্যচিত্রটি প্রদর্শিত হতে চলেছে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়েও। এ কাজে হাতে হাত রেখে এগোচ্ছে কংগ্রেসের পড়ুয়া সংগঠন এনএসইউআই, ভিম আর্মি এবং আরও কয়েকটি পড়ুয়া সংগঠন। টুইটবার্তায় তারা জানিয়েছে, শুক্রবার বিকেল পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নর্থ ক্যাম্পাসের কলা বিভাগের ৪ নম্বর গেটের সামনে ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’ দেখানো হবে। এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও নিজেদের অবস্থানে অনড়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, তথ্যচিত্রটির প্রদর্শন কোনও মতেই করতে দিতে রাজি নন তাঁরা। এ জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত ‘ব্যবস্থা’ই রাখা হবে। ফলে মোদীকে নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্র প্রদর্শন ঘিরে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়েও গোলমাল বাড়ার সম্ভাবনা।
বুধবার জ়ামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ায় এই তথ্যচিত্রটি প্রদর্শন করা হতে পারে এই আশঙ্কায় পুলিশ ১৩ জন পড়ুয়াকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে অবশ্য তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।