প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। তার আগে পথকুকুরদের গলায় পরানো হল এই কিউআর কোড কলার (ইনসেটে)। নভি মুম্বইয়ে। ছবি: সংগৃহীত।
নাইলনের বেল্টে লকেটের মতো ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে ছোট্ট একখানি প্লাস্টিকের কার্ড। তবে এ ‘লকেট’ অলঙ্কার নয়। ওই কার্ডে ছবি দেওয়া রয়েছে একটি কিউআর কোডের। ওই কোড হল একটি পরিচয়পত্র। তবে মানুষের নয়, কুকুরের।
নভি মুম্বইয়ের খারঘর এলাকার এমন শতাধিক পথকুকুরের গলায় পরিয়ে দেওয়া হয়েছে এই কিউআর কোড কলার। নতুন ‘গয়না’র নেপথ্যে অবশ্য একটি কারণও রয়েছে। আগামী রবিবার নভি মুম্বই মেট্রো লাইনের উদ্বোধনে খারঘরে আসতে পারেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারিখ নিয়ে পাকাপাকি সিদ্ধান্ত না হলেও প্রস্তুতি আগে থেকেই শুরু হয়েছে খারঘরে। তবে পথকুকুরদের ‘গয়না’ সরকারি উপহার নয়। বরং সরকারি পদক্ষেপ থেকে বাঁচতেই ওই কলার পরানো হয়েছে তাদের।
গত ৮ অক্টোবর থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু করেছেন নভি মুম্বইয়ের পশুপ্রেমীরা। পশুদের অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারী সীমা টঙ্কের নেতৃত্বে এই প্রক্রিয়াটি শুরু হয়। কেন তিনি পথকুকুরদের কলার পরাচ্ছেন, তা জানতে চাওয়ায় সীমা বলেন, ‘‘সাধারণত ভিআইপিরা এলে এলাকা পরিষ্কার করার হুজুগ ওঠে। সেই সময় কোপ পড়ে পথকুকুরদের উপর। নগর প্রশাসন তখন শহর জুড়ে এই পথকুকুরদের গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে অন্যত্র ছেড়ে দিয়ে আসে। ‘ঘর’ছাড়া হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে ওরা। খাবার জোটে না অনেক সময়ে। তাই আমরা ওদের গলায় পরিচয়পত্র দেওয়া কিউআর কোড কলার পরিয়েছি। ওই কোড স্ক্যান করলেই জানা যাবে কুকুরটি কোথাকার। কারা তার রক্ষণবেক্ষণের দায়িত্বে আছে। কারাই বা ওই কুকুরদের নিয়মিত খেতে দেয়— সব তথ্য। যদি এদের তুলে নিয়ে গিয়ে দূরে কোথাও ছেড়ে দেওয়াও হয়, তবে ওই পরিচয়পত্র দেখে কোনও পশুপ্রেমী আবার যথাস্থানে ফিরিয়ে দিতে পারেন কুকুরগুলিকে।’’
সীমা জানিয়েছেন, কয়েকটি অসরকারি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে জোট বেঁধে পথকুকুরদের জন্য এই পদক্ষেপ শুরু করেছেন তাঁরা। ১০০টিরও বেশি এমন কার্ড বাঁধা হয়েছে পথকুকুরদের গলায়। প্রত্যেকটি বানাতে খরচ পড়েছে ২০০ টাকা করে। তাঁরা সমাজমাধ্য়মে এবং অন্যান্য ভাবে সাধারণ মানুষের থেকেই অনুদান হিসাবে সংগ্রহ করেছেন ওই অর্থ।
প্রসঙ্গত, পথকুকুরদের জন্য এই ধরনের কিউআর কোড কলারের ভাবনাটি আসলে অক্ষয় রিদলান নামে এক প্রযুক্তিবিদের। তিনি গত ফেব্রুয়ারি মাসে পশুদের জন্য এই কলার বানান।