প্রতীকী ছবি।
গার্হস্থ্য হিংসায় স্বামীর পরিচিত বা অপরিচিতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা যাবে না। এমনই নির্দেশ দিল বম্বে হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বম্বে হাইকোর্টের ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চ জানিয়েছে, স্বামীর সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক রয়েছে বা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ অথবা দত্তক নেওয়া হয়েছে, এমন কেউ ছাড়া কোনও পরিচিত বা অপরিচিতকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮-এ ধারায় এ ধরনের হিংসায় অভিযুক্ত করা যাবে না।
মঙ্গলবার এই রায়দানের সময় বিচারপতি বিশ্বাস যাদব এবং বিচারপতি মুকুন্দ সেওলিকরের পর্যবেক্ষণ, গার্হস্থ্য হিংসায় অভিযোগ করার সময় স্বামীর কাছেপিঠের সমস্ত লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার প্রবণতা বাড়ছে মহিলাদের।
সম্প্রতি বম্বে হাইকোর্টের মুম্বইয়ের শেখ পরিবারের পুত্রবধূ তাঁর স্বামী এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ করে এফআইআর করেছিলেন। অভিযোগ, মোটা অঙ্কের অর্থ পণ না দেওয়ায় বিয়ের দু’মাসের মধ্যেই শ্বশুরবাড়িতে তাঁর উপর অত্যাচার শুরু হয়। ২০১৮ সালে ওই মহিলার বিয়ে হয়েছিল। তবে ২ লক্ষ টাকা পণ না দেওয়ার জন্য ৭ মাস পরেই ২০১৯ সালে তাঁকে শ্বশুরবাড়ি থেকে বার করে দেওয়া হয়। এর পর স্বামী, তাঁর ভাই, অবিবাহিত দু’বোন, খুড়শ্বশুর-সহ ছ’জন এবং যে মহিলা তাঁদের বিয়ে ঠিক করেছিলেন, তাঁদের সকলের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেন ওই মহিলা। এর পর ওই ৭ জনই আদালতের দ্বারস্থ হন। মঙ্গলবার সেই আবেদনের ভিত্তিতে এই রায় দিয়েছে ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চ। যদিও ওই মহিলার স্বামী এবং ১ বোন ছাড়া বাকি সকলের বিরুদ্ধে এফআইআর খারিজ করে দিয়েছে আদালত। বেঞ্চের মতে, ‘‘স্বামী এবং তাঁর ১ বোন ছাড়া বাকিদের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ কেন আনা হল, তা অস্পষ্ট। এ ধরনের অভিযোগে তাঁদের কোনও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল না। ফলে গার্হস্থ্য হিংসার আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা চালানো হলে তা আইনের অপব্যবহার করা হবে। তা ছাড়া, স্বামীর কাছেপিঠের সমস্ত আত্মীয়পরিজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা একটা প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’
আত্মীয়পরিজনেরা রেহাই পেলেও এই মামলায় ওই মহিলার স্বামী এবং ১ বোনের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার মামলা চলবে বলে জানিয়েছে আদালত। মহিলার দাবি, বিয়ের পরে পণ না দেওয়ার জন্য নানা কটূক্তি-সহ মারপিটও করেছেন তাঁরা। তবে যে মহিলা তাঁদের বিয়ে ঠিক করেছিলেন, তাঁকে ‘মধ্যস্থতাকারী’ আখ্যা দিয়ে আদালত বলেছে, ‘‘ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮-এ ধারায় অর্থাৎ গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ করতে হলে স্বামীর সঙ্গে রক্তের বা বৈবাহিক সম্পর্ক থাকতে হবে অথবা দত্তক নেওয়াদের বিরুদ্ধেও এই অভিযোগ আনা যেতে পারে।’’