প্রতীকী ছবি।
দান খয়রাতি নাকি জনগণের করের টাকায় প্রকৃত উন্নয়ন? কিছু দিন ধরেই এই বিতর্কে সরগরম দেশ। এ বার এই বিষয়ে মুখ খুললেন নীতি আয়োগের প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমার। তিনি বলেন, “নিজেদের আর্থিক সামর্থ্যের বাইরে বেরিয়ে রাজ্যগুলির দান খয়রাতি করে জনগণের টাকা নয়ছয় করা উচিত নয়।” তাঁর সংযোজন, জনগণের করের টাকায় উন্নয়ন আর অকারণ দান খয়রাতি এক জিনিস নয়।
যে কোনও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণের মধ্যে উন্নয়নের সুফল বণ্টন করে দেওয়া যে জরুরি তা স্বীকার করেও রাজীব জানান, যে উন্নয়নে সামাজিক অগ্রগতির পরিবর্তে ব্যক্তিগত স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া হয়, সেই রকম উন্নয়নকে অবশ্যই পরিত্যাগ করা উচিত। বিশেষত ঋণের জালে জর্জরিত রাজ্যগুলিকে তিনি এই বিষয়ে সতর্ক হতে বলেছেন। ভারতের অবস্থাও ঋণগ্রস্ত শ্রীলঙ্কার মতো হবে কি না এই প্রশ্নের উত্তরে রাজীব জানান, তেমন কোনও পরিস্থিতি ভারতের ক্ষেত্রে হবে না। ভারত যে প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কার দিকে আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সে কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীও তাঁর একটি বক্তব্যে বিরোধী দলগুলির উদ্দেশে তোপ দেগে বলেছিলেন, “কে কত বেশি দান খয়রাতি করতে পারে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে তার প্রতিযোগিতা চলছে।” এতে ভারতের ‘আত্মনির্ভর’ হওয়ার পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। আম আদমি পার্টির তরফে অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সমালোচনা করা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, দিল্লি ও পঞ্জাবে ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টি ক্ষমতায় এলে বিনামূল্যে জল ও বিদ্যুৎ দেওয়ার কথা বলেছিল। তারা সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষাও করেছে।
কিছু দিন আগে বিজেপি-ঘনিষ্ঠ আইনজীবী বলে পরিচিত অশ্বিনী উপাধ্যায় সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। সেখানে নির্বাচনে জয় পাওয়ার জন্য মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া এবং ভোটারদের প্রভাবিত করতে দান খয়রাতির আশ্রয় নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলিকে ভোটে লড়তে না দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। শীর্ষ আদালত তেমন কোনও পদক্ষেপ না করলেও, এই বিষয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করার কথা বলে। এই প্রেক্ষিতে নীতি আয়োগের প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান রাজীবের মন্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।