ফাইল চিত্র।
বিধানসভা নির্বাচন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে উত্তরপ্রদেশে আসর গরম করতে নেমে পড়েছেন মিম-এর নেতা আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। তিনি প্রচারে আসা মানেই বিতর্ক। এক দিকে রাজনৈতিক শিবিরে প্রশ্ন, বিজেপি-র ‘বি’ দল হিসাবে বিজেপি-বিরোধী সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কে চিড় ধারানোটাই তাঁর আসল উদ্দেশ্য কি না। অন্য দিকে তিনি নিজে যে ভাবে প্রচার অভিযান করছেন তাতে স্পষ্ট, সংখ্যালঘু এবং যাদব ভোট এক ছাতার তলায় আসার ক্ষেত্রে যথাসাধ্য বাধা দেওয়াটাই তাঁর লক্ষ্য।
এই পরিপ্রেক্ষিতে আজ উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের পুলিশ ওয়েইসির বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে। অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য করেছেন ওয়েইসি। পাশাপাশি জনসভায় সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেওয়া এবং কোভিড বিধি অমান্য করার অভিযোগও আনা হয়েছে।
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, বিজেপি সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওয়েইসির বিরুদ্ধে এফআইআর করার ঘটনায় রাজনৈতিক ভাবে লাভ হবে তাঁরই। এর ফলে সংখ্যালঘুদের মধ্যে তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা এবং গুরুত্ব বাড়বে বই কমবে না। এসপি-সহ রাজ্যের অন্যান্য বিরোধী দলগুলির বক্তব্য— এটা শুধু ওয়েইসিরই অভীষ্ট নয়, যোগী আদিত্যনাথেরাও সেটাই চান। প্রায় ১০০টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা ভাবছে এআইএমআইএম (মিম)। এই আসনগুলিতে সংখ্যালঘু ভোট কাটতে পারলে সরাসরি ক্ষতি অখিলেশ যাদবের এসপি-র, লাভ বিজেপির। রাজ্যের জনসংখ্যার এক পঞ্চমাংশ ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। যাদব ৯ থেকে ১০ শতাংশ। ২০২২-এ সাফল্য পেতে হলে এসপি-কে এই দুই সম্প্রদায়ের ভোট একজোট করতে হবে। আর সেই কাজে বাধা দিতেই ওয়েইসিকে বিজেপি নামিয়েছে, এই অভিযোগ বিজেপির। এর আগে বিহারের নির্বাচনেও বেশ কয়েকটি আসনের ফল বিজেপির অনুকূলে ঘুরিয়ে দিতে পেরেছিলেন মিম-এর এই নেতা, না-হলে সেই রাজ্যে সরকার গড়তেই পারত না বিজেপি-জোট।
উত্তরপ্রদেশের জনসভায় ওয়েইসি বলেছেন, রাজ্যে যুগ যুগ ধরে সংখ্যালঘুদের বঞ্চনা করেছে সমস্ত রাজনৈতিক দল— বিজেপি, এসপি, বিএসপি, কংগ্রেস। তাঁর কথায়, নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন ধর্মনিরপেক্ষতার কাঠামো ভেঙে ফেলে দেশকে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করতে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে শুধুমাত্র বিজেপিকেই নয়, গত তিন দিনে ফৈজাবাদ, বরাবাঁকি এবং সুলতানপুরের তিনটি জনসভায় অ-বিজেপি দলগুলিকেও একই ভাবে আক্রমণ করতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে।