জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। —ফাইল চিত্র।
চার বার কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন মধ্যপ্রদেশের সিন্ধিয়া রাজ পরিবারের সদস্য যশোধরা রাজে সিন্ধিয়া। মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা ভোটের মুখে দলকে তিনি জানিয়েছেন, এ বার আর তাঁর পক্ষে লড়া সম্ভব হবে না। রাজ্যের যুবকল্যাণ ও কারিগরি শিক্ষা মন্ত্রীর এই ঘোষণার পর রাজনীতির অঙ্গনে নতুন জল্পনা, তা হলে কি এ বার বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হতে চলেছেন গোয়ালিয়রের সিন্ধিয়া পরিবারের আর এক সদস্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া? এ নিয়ে বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মন্তব্য সেই জল্পনাকে আরও উস্কে দিয়েছে।
উনসত্তর বছর বয়সি যশোধরা রাজে শিবপুরী বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রথম ভোটে জিতেছিলেন ১৯৯৮ সালে। তার পর ২০০৭ সালে গোয়ালিয়র থেকে সাংসদ। ২০১৩ সালে ফের মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় ফিরে আসেন তিনি। সেই বছর থেকে আজ পর্যন্ত ওই কেন্দ্রেরই বিধায়ক। বিজেপির প্রদেশ সভাপতি ভি ডি শর্মা বলেন, ‘‘যশোধরা রাজেজি আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী। তবে স্বাস্থ্যের কারণ দেখিয়ে তিন মাস আগেই তিনি দলকে জানিয়েছেন, এ বার আর তাঁর পক্ষে ভোটে লড়া সম্ভব হবে না।’’ যশোধরা রাজের দুই পুত্র ও এক কন্যা। তাঁরা থাকেন আমেরিকায়। রাজনীতির সঙ্গে কোনও যোগই নেই। সেখান থেকেই জল্পনার শুরু তাঁর দাদা মাধবরাও সিন্ধিয়ার পুত্র জ্যোতিরাদিত্যকে নিয়ে।
মধ্যপ্রদেশের ভোটের লড়াইয়ে এ বার বেশ কয়েক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও সাংসদকে টিকিট দিয়েছে বিজেপি। টিকিট দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য নরেন্দ্র সিংহ তোমরকে। জ্যোতিরাদিত্য লড়বেন কি না, সেই বিষয় নিয়ে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেছিলেন তোমরকে। সিন্ধিয়ার বিধানসভা ভোটে লড়ার সম্ভাবনা খারিজ করে দেননি তিনি। জানিয়েছেন, এই বিষয় নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। এই প্রেক্ষাপটেই আজ গোয়ালিয়রে পৌঁছেছেন জ্যোতিরাদিত্য। রাজ্যের উন্নয়নের কয়েকটি প্রকল্প নিয়ে মন্তব্য করার পর সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, ‘‘বিজেপিতে দলের নেতৃত্বের নির্দেশ পালন করা একজন কর্মীর জন্য শুধু দায়িত্বই নয়, ধর্ম।’’ এর থেকে বেশি বলতে চাননি তিনি।
কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে আসার পর রাজনীতির দ্বিতীয় ইনিংসে মধ্যপ্রদেশ থেকে রাজ্যসভার সদস্য হয়েছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। নরেন্দ্র মোদী তাঁকে মন্ত্রিসভায় জায়গা দিয়েছেন। কিন্তু এবার নিজের রাজ্যে ভোটের লড়াইয়ে নামলে সেটাই হবে বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর প্রথম লড়াই। ২০১৯ সালে মধ্যপ্রদেশেরই গুনা লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে হেরে গিয়েছিলেন জ্যোতিরাদিত্য। সেই গুনারই দু’টি বিধানসভা কেন্দ্রের নাম এ বার সামনে চলে এসেছে। বামোরি কিংবা কোলারাস কেন্দ্রে সিন্ধিয়া প্রার্থী হচ্ছেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে। নাকি বিজেপি তাঁকে ছেড়ে দেবে পিসি যশোধরা রাজের শিবপুরী কেন্দ্রটিকে?
সব মিলিয়ে ভোটের মুখে সিন্ধিয়া পরিবারকে নিয়ে জল্পনারপারদ চড়ছে।