দিল্লিতে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে বৈঠকে শরদ পওয়ার।—ছবি টুইটার
শরদ পওয়ারের ‘না’-কেও না কি ‘হ্যাঁ’ বলে ধরে নিতে হয়!
রাহুল গাঁধীর সঙ্গে শরদ পওয়ারের দিল্লিতে বৈঠকের পর থেকেই জল্পনা তুঙ্গে, দুই দল কি মিশে যাচ্ছে? পওয়ার কি ফিরছেন কংগ্রেসে? তিনি অবশ্য মহারাষ্ট্রে ফিরে দলের বৈঠকে জানিয়েছেন, এমন সম্ভাবনা নেই। দলের নেতাদের দিয়েও প্রকাশ্যে একই কথা জানানো হয়েছে। তার পরেও নিশ্চিন্ত নন খোদ এনসিপি নেতারাই।
রাহুল-পওয়ার বৈঠকের পরে দুই দল মিশে যাওয়ার সম্ভাবনার প্রথম খবর এসেছিল কংগ্রেস শিবির থেকেই। লোকসভায় প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পেতে কংগ্রেসের ৫৫ জন সাংসদকে জিতে আসতে হত। কিন্তু কংগ্রেস থেকে এ বারে জিতে এসেছেন মাত্র ৫২ জন। বলা হচ্ছিল, কংগ্রেস সাংসদদের সঙ্গে শরদ পওয়ারের আরও ৫ সাংসদ যদি জুড়ে যান, তা হলে অনায়াসে এই মর্যাদা কংগ্রেস পেতে পারে। বিনিময়ে রাজ্যসভায় মিশে যাওয়া কংগ্রেসের নেতৃত্ব দিতে পারেন খোদ পওয়ার।
কিন্তু পওয়ারের তরফে জানানো হয়, এমন কোনও সম্ভাবনা নেই। তার কারণও নানাবিধ। সনিয়া গাঁধীর নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে পওয়ার পৃথক দল গড়েছিলেন। সেই বিষয়টি বর্তমানে ততটা প্রাসঙ্গিক না হলেও মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে এখনও কংগ্রেসের থেকে বেশি সফল এনসিপি। সেখানে কংগ্রেস মাত্র একটি আসন পেয়েছে, এনসিপি চারটি। আর অজিত পওয়ারও এই প্রস্তাবে একেবারেই রাজি হবেন না। কারণ, নিজের পরিচিতি তিনি তৈরি করেছেন এনসিপি-তে থেকেই।
তবে এনসিপির অনেক নেতাই বলছেন, ‘‘আসলে পওয়ার সাহেব সব সময় নিজের ‘বন্ধু’ ও ‘শত্রু’কে ধোঁয়াশায় রাখতে পারেন। ফলে তাঁর ‘না’কে ‘হ্যাঁ’ বলে ধরে নিতে হয়।’’ তাঁদের ব্যাখ্যা, পওয়ারের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বাসনা ছিল। এখন বুঝেছেন, তা আর হচ্ছে না। ফলে কন্যা সুপ্রিয়া সুলেকে রাজনৈতিক ভাবে প্রতিষ্ঠা করাই তাঁর লক্ষ্য। এটা ঠিক যে কংগ্রেসে মিশে গেলে সুপ্রিয়ার পরিচিতি সে ভাবে থাকবে না। তবে সেখানে তিনি যদিও বা ভেসে থাকতে পারেন, অজিত পওয়ার থাকতে এনসিপি-তে সুপ্রিয়ার আধিপত্য প্রতিষ্ঠা কার্যত অসম্ভব।
চলতি বছরের শেষেই মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোট। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসকে আজই দিল্লিতে ডেকে ভোট-কৌশল রচনা শুরু করেছেন। সদ্য হয়ে যাওয়া লোকসভা নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে রাজ্যের ২৮৮টি আসনের মধ্যে ২২০টিই বিজেপি-শিবসেনার দখলে। এনসিপির অনেকে ভাবছেন, এ সব বিবেচনা করে পওয়ার না আবার কংগ্রেসের সঙ্গে মিশে যাওয়ার কথাই ভেবে বসেন? সূত্রের খবর, নির্বাচন সম্পর্কে বলতে গিয়ে পওয়ার ঘনিষ্ঠদের জানিয়েছেন, ঘরে ঘরে গিয়ে কী ভাবে জনসংযোগ গড়ে তুলতে হয়, তা আরএসএসের কাছে শেখা উচিত।