তৈরি হওয়ার পরে জগন্নাথ মন্দিরে নিয়ে আসা হচ্ছে রথ। রবিবার পুরীতে। পিটিআই
সকালে পাহুন্ডি বিজে বা জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার রথে আরোহণের আচারের সময়ে পুরীতে বৃষ্টির সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। বেলাবেলি ছেরা পহরা বা পুরীর গজপতি রাজার হাতে সোনার ঝাড়ুতে জগন্নাথদেবের পথ পরিমার্জনের সময়েও বৃষ্টি হতে পারে। আবহবিজ্ঞানীদের পূর্বাভাসে, সোমবার রথযাত্রার সকালের পুরীর আবহাওয়া নিয়ে এমনই আঁচ মিলেছে। ভুবনেশ্বরের হাওয়া অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি নিম্নচাপের দরুন উৎকল-অন্ধ্রের উপকূলে রথে ভালই বৃষ্টি হতে পারে। পুরীও তার আওতাতেই থাকবে।
রবিবার পুরীর মন্দিরের সেবায়েতদের প্রকৃতির খামখোয়াল নিয়ে তাপ-উত্তাপ নেই। আশঙ্কা রয়েছে, সকালে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে রথে এনে বসানোর সময়ে বৃষ্টিতে তাঁরা নাজেহাল হতে পারেন। আবার দুপুরের দিকে পর পর তিনটি রথ বলভদ্রের তালধ্বজ, সুভদ্রার দর্পদলন এবং জগন্নাথের নন্দিঘোষ চলতে শুরু করার পরে পুরীতে রোদ উঠবে। তীব্র রোদে তখন সেবায়েতদের পা পুড়ে ফোস্কাও পড়তে পারে। কিন্তু এ সব তুচ্ছ বিষয়ে স্বভাবতই উৎকলের জগন্নাথভক্তেরা দৃক্পাত করছেন না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কুলপান্ডা প্রতিহারী রঘুনাথ গোছিকর যেমন বলছেন, “প্রভুর রথ তিনি নিজেই টেনে নিয়ে যাবেন। ভক্ত সেবায়েতদের কোনও কষ্ট পেতে হবে না।”
রবিবার দিনের নির্দিষ্ট সময়েই রথ তিনটি শ্রী মন্দিরের সিংহদ্বারে আনা হয়েছে। জগন্নাথদেবের কাছ থেকে আজ্ঞামালা রথে পৌঁছে দেন দয়িতাপতিরা। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার শুধু সেবায়েতদের দিয়ে ভক্তশূন্য রথযাত্রা সম্পন্ন করা হবে। এই পরিস্থিতিতে পুরীতে কার্ফু শনিবার থেকেই জারি হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত থাকবে। পুরীর কালেক্টর সমর্থ বর্মা জানিয়েছেন, শহরের রাস্তায় যাতে কেউ না বেরোয় দেখা হচ্ছে। আর জগন্নাথদেবের রথের পথ বড় দাণ্ডের (গ্র্যান্ড রোড) আশপাশে থাকছে বিশেষ সুরক্ষা। কালেক্টর বলেন, “বড় দাণ্ডে শ্রী মন্দির থেকে গুন্ডিচা মন্দির পর্যন্ত তিন কিলোমিটার ২৩০টা বাড়ি এবং ৪১টা হোটেল রয়েছে। তা খালি করা হয়েছে। লক্ষ্য রাখছি, রথের পথের পাশে ছাদে, বারান্দায় দাঁড়িয়েও যাতে কেউ ভিড় না করে।“ শুধু কোভিড নেগেটিভ সেবায়েতরা ছাড়া কেউ থাকবে না।
পুরীর জগন্নাথভক্ত বালুকাশিল্পী সুদর্শন পট্টনায়কও এ দিন জগন্নাথের রথের ত্রিমাত্রিক প্রতিকৃতি তৈরি করেছেন। দৈর্ঘ্যে ৪৩ ফুট, প্রস্থে ৩৫.২ ফুট জগন্নাথের এই নন্দিঘোষ তৈরি করতে তাঁর ৮ ঘণ্টা লেগেছে। ভাস্কর্যটি পুরীর জনহীন সৈকতে শোভা পাচ্ছে।