বাবার সেই বাঁশি দেখাচ্ছেন ত্রিপুরার সিপাহীজলা জেলার এসপি কৃষ্ণেন্দু চক্রবর্তী। ছবি: বাপী রায় চৌধুরী
অনেক সন্তানই বাবার দেওয়া বই, কাগজ, কলম স্মৃতি হিসেবে রেখে দেন। ত্রিপুরায় এক পদস্থ পুলিশ আগলে রেখেছেন তাঁর বাবার দেওয়া বাঁশি। গত ২২ বছর ধরে এই বাঁশি ব্যবহার করছেন ত্রিপুরার সিপাহীজলা জেলার এসপি কৃষ্ণেন্দু চক্রবর্তী। এটি পুলিশের বাঁশি বা হুইস্ল।
কৃষ্ণেন্দুর বাবা প্রয়াত কৃশানু রঞ্জন চক্রবর্তীও ছিলেন রাজ্য পুলিশের পদস্থ অফিসার। ১৯৫১ সালে ত্রিপুরায় পুলিশের ১২ জন অফিসারের প্রথম ব্যাচের এক জন হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৮৭ সালে অবসর নেন। তখনই ওই বাঁশি তিনি ছেলেকে দেননি। কৃষ্ণেন্দু জানাচ্ছেন, বাবার অবসরের ১১ বছর পরে, ১৯৯৮ সালে তিনি ত্রিপুরা পুলিশ সার্ভিসের অফিসার হিসেবে যোগ দেন। এর পরে বাবা বাঁশিটি তাঁকে উপহার দেন। একটি রশি তথা ল্যানইয়ার্ড-এ লাগিয়ে এই হুইস্ল পুলিশ আধিকারিকদের বাঁ দিকের বুক পকেটে রাখা হয়। তিনিও তা করেন।
কৃষ্ণেন্দু বলেন, “বাঁশিটি বিলেতি। বার্মিহাংমে তৈরি। বয়সও অনেক, লেখা আছে ১৯৪৫। মেজমামা সরোজ ভট্টাচার্য পশ্চিমবঙ্গে পুলিশের ডেপুটি পুলিশ সুপার পদে কাজে যোগ দেওয়ার কিছু দিন পরে স্কটল্যান্ডে গিয়েছিলেন। ফেরার সময় বাড়ির সবার জন্যে বিভিন্ন উপহার এনেছিলেন। বাবার জন্যে আনেন হুইস্লটি। কর্মজীবনে ৩৭ বছর হুইস্লটি ব্যবহার করেছেন।” অর্থাৎ বাবা-ছেলে মিলিয়ে ৭০ বছর ধরে পুলিশের কাজ করে চলেছে ওই বিদেশি বাঁশি। কৃষ্ণেন্দুর নিজস্ব অনুভব, “২০০৬-এ বাবার মৃত্যুর পরে মনে হয় তিনি আমার সঙ্গে থাকেন সব সময়। এটাকে আমি আশীর্বাদ বলে মনে করি।”