কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা কমল নাথ। ছবি: পিটিআই।
বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’-র প্রথম জনসভা মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালে হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস সভাপতি কমল নাথ তা পত্রপাঠ খারিজ করে দেন। এ বার সেই রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’-র অন্যতম শরিক সমাজবাদী পার্টির আসন সমঝোতার প্রস্তাবও খারিজ করে দিলেন কমল নাথ।
অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি কংগ্রেসের থেকে মধ্যপ্রদেশে ছ’টি আসন চেয়েছিল। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, অখিলেশ এ বিষয়ে মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের ভারপ্রাপ্ত নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার সঙ্গে কথা বলেন। তিনি প্রয়োজনে রাহুল গান্ধী বা কমল নাথের সঙ্গেও কথা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কমল নাথ অবস্থান নেন, কংগ্রেস নিজেই রাজ্যের ২৩০টি বিধানসভা আসনে লড়বে। তাঁর দাবি, কংগ্রেস নিজের ভরসাতেই মধ্যপ্রদেশে বিজেপিকে হারাতে পারবে। অন্য কোনও ‘ছোটখাটো’ দলের সঙ্গে হাত মেলানোর প্রয়োজন নেই।
রাজনৈতিক সূত্রের খবর, এই সিদ্ধান্তে অখিলেশ ক্ষুব্ধ। তিনি বলেছেন যে কংগ্রেস যদি তাকে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় আসন দিতে রাজি না হয়, তবে উত্তরপ্রদেশে বিধানসভায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়বে না ‘বড় ভাই’ এসপিও। সমাজবাদী পার্টির নেতাদের মত ছিল, ‘ইন্ডিয়া’ লোকসভা ভোটে আসন ভাগাভাগি করে লড়বে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনে আসন সমঝোতার সিদ্ধান্ত হয়নি ঠিকই। তবে সেখানেও আসন সমঝোতা হলে লোকসভা ভোটে একসঙ্গে লড়াইয়ের মহড়া হয়ে যেত।
অখিলেশের বক্তব্যে কংগ্রেস হাইকমান্ড চিন্তিত। কারণ, উত্তরপ্রদেশে লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে সমাজবাদী পার্টির থেকে আসন চাইতে তো হবেই, এ ছাড়া, রায়বরেলী, অমেঠীতে গান্ধী পরিবারের সদস্যরা ভোটে লড়লেও সেখানে এসপি-র সাহায্য প্রয়োজন। আর সব থেকে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশে বিরোধী শিবিরের মধ্যে আসন সমঝোতা না হলে সামগ্রিক ভাবেই ‘ইন্ডিয়া’-র ঐক্য প্রশ্নের মুখে পড়বে।
মধ্যপ্রদেশে ২০১৮-র বিধানসভা নির্বাচনে এসপি একটি আসনে জিতেছিল। উত্তরপ্রদেশ-লাগোয়া মধ্যপ্রদেশের ছ’টি আসনে এসপি দ্বিতীয় স্থানে ছিল। অখিলেশ কংগ্রেসের থেকে অন্তত ছ’টি আসন চেয়েছিলেন। কিন্তু কমল নাথ রাজি হননি। তিনি উল্টে সমাজবাদী পার্টির জেতা আসনেও কংগ্রেসের প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছেন। আদিবাসী এলাকায় প্রভাবশালী গন্ডোয়ানা গণতন্ত্র পার্টিকে তিনি আসন ছাড়তে রাজি হননি।
প্রসঙ্গত, ২০১৮-য় কংগ্রেস মধ্যপ্রদেশ জিতে ক্ষমতায় এলেও জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া অনুগামীদের নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিলে সরকারের পতন হয়। সমাজবাদী পার্টির নেতাদের বক্তব্য, পাঁচ বছর আগে কংগ্রেস সব থেকে বেশি আসন জিতলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। বিএসপি ও নির্দল বিধায়কদের সমর্থন নিতে হয়েছিল। অন্তত ৭০টি আসনে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ ভোটের ফারাক ছিল। সে কথা মাথায় রেখেই কংগ্রেসের উচিত ছিল, এসপি ও অন্য ছোটখাটো দলগুলিকে সঙ্গে নেওয়া।