পিতাকে শেষশ্রদ্ধা জানাচ্ছে শিশুপুত্র। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার)।
সামনে শায়িত রয়েছে বাবার দেহ। শোকে পাথর হয়ে সেই দেহের দিকে একদৃষ্টে চেয়ে রয়েছেন মা, ঠাকুমা। দৃশ্যতই কী ঘটেছে, তা পুরোটা বুঝতে পারছে না ওরা দু’জন। কচি আঙুল কপালের উপর দিয়ে বাবাকে স্যালুট করছে ছ’বছরের শিশুপুত্র। গায়ে সেনার জংলা পোশাক। পাশে দাঁড়িয়ে দু’বছরের বড় দাদাকে অনুকরণ করছে বোন। এই দৃশ্যই দেখা গেল কাশ্মীরে জঙ্গিহানায় হত ভারতীয় সেনার কর্নেল মনপ্রীত সিংহের শেষযাত্রায়।
শুক্রবার কাশ্মীর থেকে পঞ্জাবের মোহালি জেলার মুল্লানপুরের বাড়িতে এসে পৌঁছয় মনপ্রীতের দেহ। আগে থেকেই সেখানে ভিড় জমিয়েছিলেন প্রতিবেশী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। দেহ বাড়ির সামনে রাখার পরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিজনেরা। ভিড়ের মধ্যেই প্রতিবেশীদের কেউ কেউ সামনে নিয়ে আসেন মনপ্রীতের দুই শিশুসন্তানকে। শোকের আবহে সারল্যমাখা মুখ নিয়ে প্রয়াত বাবাকে স্যালুট ঠুকে শেষ শ্রদ্ধা জানায় তারা।
বুধবার দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগে জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয় মনপ্রীতের। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানায়, অনন্তনাগের গাড়োল এলাকায় কয়েক জন জঙ্গি লুকিয়ে ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার গভীর রাতেই তাঁদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়। বুধবার সকাল থেকে ওই জঙ্গিদের সঙ্গেই নিরাপত্তারক্ষীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। চলতে থাকে অবিরত গুলির লড়াই। কোকারনাগ এলাকায় কর্নেল সিংহ ১৯ রাষ্ট্রীয় রাইফেল্স ইউনিটকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তাঁর উপর নির্বিচারে গুলি চালায় জঙ্গিরা। ঝাঁঝরা হয়ে যায় কর্নেলের দেহ। মনপ্রীত ছাড়াও মেজর আশিস ডোনচাক এবং ডিএসপি হুমায়ুন মুজামিলের মৃত্যু হয়েছে জঙ্গি হামলায়।
তিন জনকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে ‘রেজিস্ট্যান্ট ফ্রন্ট’ নামের একটি জঙ্গিগোষ্ঠী। তারা লস্কর-ই-তইবার একটি অংশ। জঙ্গিদের খোঁজে শুক্রবারও ওই এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়েছে সেনা।