ফাইল চিত্র।
আজ রাত থেকেই আকবর রোড বন্ধ করে দেওয়া হল। লোহার ব্যারিকেডের প্রাচীর তৈরি করে কংগ্রেসের সদর দফতর ঘিরে ফেলল দিল্লি পুলিশ। আগামিকাল ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সনিয়া গান্ধী ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হবেন। কংগ্রেসের সমস্ত নেতা দলের সদর দফতর থেকে ইডি-র দফতর পর্যন্ত মিছিল করবেন। দলের সাংসদেরা প্রথমে সংসদে বিক্ষোভ দেখাবেন। তার পরে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়ে গ্রেফতার বরণ করবেন। কিন্তু সে সবের আগেই দিল্লি পুলিশ তাঁদের ঠেকাতে রাস্তায় নেমে পড়ল।
গত মাসে ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় ইডি রাহুল গান্ধীকে পাঁচ দিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। ওই পাঁচ দিনই কংগ্রেসের সমস্ত নেতা দিল্লির রাস্তায় নেমে বিক্ষোভদেখিয়েছিলেন। কালও একই ভাবে কংগ্রেস প্রতিবাদে নামতে চাইছে। তারা অন্যান্য বিরোধী দলের সমর্থন চাইলেও তাতে কতখানি সাড়া মিলবে, তা নিয়ে অবশ্য সংশয় রয়েছে। ২১ জুলাইয়েরসমাবেশের জন্য কাল তৃণমূল কংগ্রেসের কেউই দিল্লিতে থাকবেন না। দু’দলের বর্তমান সম্পর্কেরআবহে সনিয়াকে ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে প্রতিবাদে তৃণমূলের যোগ দেওয়ার সম্ভাবনাও ছিল না। অন্যান্য দল যোগ দেবে কি না, এখনও স্পষ্ট নয়। তবে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে আগামিকাল সকালে অন্য দলগুলির সংসদীয় দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
আজ কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘মোদী-শাহের জুড়ি আমাদের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে যে ভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চালাচ্ছেন, তার বিরুদ্ধে এবং দলেরসভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর পাশে থাকার বার্তা দিতে কংগ্রেস গোটা দেশে বিক্ষোভ দেখাবে।’’ রাহুলকে পাঁচ দিনে ৫০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। সদ্য কোভিড ও অন্যান্য অসুস্থতা থেকে সেরে ওঠা সনিয়াকে ইডি কত দিন জিজ্ঞাসাবাদ করবে, তা স্পষ্ট নয়। রাহুলের জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে কংগ্রেস নেতারা চব্বিশ নম্বর আকবর রোড থেকে ইডি-র সদর দফতর পর্যন্ত মিছিল করে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। প্রতি দিনই পুলিশ তাঁদের বাধা দিয়েছিল। কংগ্রেসনেতাদের আটক করে বিভিন্ন থানায় সারা দিন বসিয়ে রাখা হয়েছিল। সনিয়ার জিজ্ঞাসাবাদের সময়েও একই ভাবে কংগ্রেস বিক্ষোভদেখাতে চাইছে।
এমনিতেই সোমবার থেকে কংগ্রেস ও অন্য বিরোধীরা মূল্যবৃদ্ধি, জিএসটি নিয়ে সংসদ অচল করে রেখেছে। রাহুল তাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আজ অমেঠির সাংসদ স্মৃতি ইরানি বলেছেন, ‘‘রাহুল গান্ধী সংসদে প্রশ্ন করেন না।সংসদীয় প্রক্রিয়াকে অসম্মান করেন। সংসদে মাত্র ৪০ শতাংশ উপস্থিতি। যে ব্যক্তির রাজনীতিতে কোনওযোগদান নেই, তিনি সংসদেযাতে কোনও কাজ না হয়, তা নিশ্চিত করতে চাইছেন।’’
আজ সন্ধ্যায় মল্লিকার্জুন খড়্গের বাড়িতে কংগ্রেসের সাংসদ, এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক, রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত নেতাদের বৈঠক হয়। বৈঠকে আগামিকালের রণকৌশল নিয়ে আলোচনার পরে কংগ্রেস নেতারা জানান, গোটা দেশ মোদী সরকারের ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, স্বৈরাচার, গুন্ডাগিরির’ সাক্ষী। ইডি-সিবিআইয়ের মতো ‘হাতের পুতুলকে’ কংগ্রেস ভয়পাবে না।