কঠিন সময়েই আড়ালে কেন, রাহুলকে নিয়ে প্রশ্ন

কুড়ি মাসও কাটল না। ৭২ বছর বয়সে দলের রাশ ফের হাতে নিতে হল সনিয়াকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৯ ০২:৫৯
Share:

ছবি: পিটিআই।

দীর্ঘ কর্মজীবনের পর ছেলেকে দায়িত্ব বুঝিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন সনিয়া গাঁধী। এক গাল হেসে বলেছিলেন, ‘‘এ বার বই পড়ব, সিনেমা দেখব, পুরনো চিঠি ডিজিটাইজ করব।’’ শরীরটাও ভাল যাচ্ছিল না তাঁর।

Advertisement

কুড়ি মাসও কাটল না। ৭২ বছর বয়সে দলের রাশ ফের হাতে নিতে হল সনিয়াকে। অথচ ইস্তফা ঘোষণার সময় রাহুলই বলেছিলেন, গাঁধী পরিবারের বাইরেই কাউকে তাঁর উত্তরসূরি বাছতে। তা হল কই? সভাপতি থাকতে থাকতে নবীনদের সামনে এনে দল সাজাতেই বা রাহুল পারলেন না কেন? লোকসভায় হারের দায় নিয়ে ইস্তফা দিলেও কেনই বা পালাবদল পর্বটি মসৃণ করে দিলেন না রাহুল? আর সনিয়া যদি বা অন্তর্বর্তী দায়িত্ব নিলেন, সভাপতি নির্বাচনের নির্ঘণ্ট কেন বেঁধে দেওয়া হল না?

রাহুল ইস্তফায় অনড় থাকায় সনিয়া যদি হাল না ধরতেন, তাহলে কংগ্রেস ভেঙে যেত— এ কথা কংগ্রেসের অধিকাংশ নেতাই মনে করেন। কিন্তু রাহুলের উপর ভরসা রেখে দলের যে নবীন নেতারা রাজনৈতিক উত্থানের স্বপ্ন দেখছিলেন, তাঁদের মনে হাজারো প্রশ্ন উঠে আসছে। রাহুলের ইস্তফার পর কিছু নবীন মুখও পদত্যাগ করেছিলেন। এমনই এক জনের কথায়, ‘‘রাহুলের উপরে অনেক আশা করেছিলাম। দায়িত্ব নিয়ে উনি বলেছিলেন নবীনদের জন্য মঞ্চ খালি রেখেছেন। কিন্তু এখন নিজেই পালিয়ে গেলেন!’’

Advertisement

এক সময়ে কংগ্রেসে প্রবীণদের ‘সিন্ডিকেট’ চলত। অনেকেরই মত, এ বারেও রাহুল প্রবীণ নেতাদের একটি গোষ্ঠীর চালে পদ ধরে রাখতে পারলেন না। তবে শেষ মুহূর্তে পাল্টা চাল দিয়ে দলের রাশ তাঁদের হাতে চলে যাওয়া রুখতে পেরেছেন। কিন্তু দলের অন্য এক নেতার কথায়, ‘‘সনিয়া আসায় তাঁর আশেপাশে প্রবীণরাই আরও শক্তিশালী হবেন। যাঁরা এত দিন রাহুলকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছিলেন।’’

কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির এক সদস্যও বলেন, ‘‘রাহুলকে বুঝতে হবে, প্রতিপক্ষ নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের মতো ব্যক্তিত্ব। রাজনীতি আবেগে হয় না, কৌশল ও মেহনতে হয়। এখনও তাঁর টিমের সদস্যরা পদযাত্রায় বেরোনোর প্রস্তাব দিচ্ছেন, কিন্তু রাহুল মনস্থির করতে পারছেন না। বাকিদের উপরে দায় না চাপিয়ে রাহুলকে বুঝতে হবে, গলদ কোথায়?’’

তবে রাহুল যখন পিছু হটলেন, দলের নেতাদের নজর এড়াচ্ছে না যে প্রিয়ঙ্কা ধাপে ধাপে সক্রিয়তা বাড়াচ্ছেন। আগে শুধুই উত্তরপ্রদেশ নিয়ে কথা বলতেন, এখন জাতীয় বিষয় নিয়েও বলছেন। যেমন কাল মন্দা নিয়ে বলেছেন। আজ উত্তরপ্রদেশে তেলের দাম বাড়ানো নিয়ে মন্তব্য করেছেন, আবার মোহন ভাগবতের সংরক্ষণ-মন্তব্য নিয়ে আরএসএস-এর বিরুদ্ধেও পাল্টা তোপ দেগেছেন। যা এত দিন করে এসেছেন রাহুল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement