বিজেপিতে যোগ দিয়ে এখন পস্তাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন গুজরাতের ছ’বারের ‘বাহুবলী’ বিধায়ক মধুভাই শ্রীবাস্তব। ছবি: সংগৃহীত।
গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে দলের টিকিট না পেয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন রাজ্যের ছ’বারের ‘বাহুবলী’ বিধায়ক মধুভাই শ্রীবাস্তব। এবং জানালেন, আসন্ন নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হিসাবেই লড়বেন। সেই সঙ্গে মধুভাইয়ের খেদোক্তি, ২৫ বছর আগে নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের জোরাজুরিতে বিজেপিতে যোগ দিয়ে এখন পস্তাচ্ছেন।
আগামী ১ এবং ৫ ডিসেম্বর গুজরাতে বিধানসভা নির্বাচন। দলীয় প্রার্থীদের প্রথম দফার তালিকা প্রকাশ করেছে বিজেপি। তাতে ২৮২টি বিধানসভা আসনে ১৬০ জন প্রার্থীর নাম রয়েছে। ওই তালিকায় নাম নেই বাঘোড়িয়া বিধানসভা কেন্দ্রের বর্তমান বিধায়ক মধুভাইয়ের। ২০১৭ সালের ওই কেন্দ্রে বিজেপির টিকিটে জিতেছিলেন তিনি। মধুভাইয়ের জায়গায় দাঁড় করানো হয়েছে বিজেপির বরোদা জেলার সভাপতি অশ্বিন পটেলকে। দলের এই সিদ্ধান্তে বেজায় চটেছেন মধুভাই। দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে সংবাদমাধ্যমে তাঁর খোলাখুলি মন্তব্য, ‘‘আমি অত্যন্ত মর্মাহত। বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ। দলের সব পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দিয়েছি।’’ তাঁর বদলে যে প্রার্থীকে দাঁড় করানো হয়েছে, সেই অশ্বিন যে কখনও স্থানীয় স্তরের নির্বাচনেও জেতেননি, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন মধুভাই।
বিধানসভা নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই নিয়ে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেল বিশেষ কিছু করতে অপারগ বলেও দাবি মধুভাইয়ের। প্রার্থিপদ নিয়ে তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দরবার পর্যন্ত করেননি তিনি। মধুভাইয়ের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে যাব কেন? এ নিয়ে সব কিছুই স্থির করেন দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্ব। নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের সঙ্গে আমার সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে।’’ যদিও তাঁর দাবি মতো, মোদী বা শাহের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়নি তাঁর। সংবাদমাধ্যমের একাংশের বক্তব্য, নির্বাচনের টিকিট না পেয়ে মধুভাইয়ের সঙ্গে আরও ৫ বিজেপি নেতা দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গা মামলায় নাম জড়িয়েছিল ‘বাহুবলী’ রাজনীতিক মধুভাইয়ের। তার আগে নির্দল হিসাবে বিধানসভা নির্বাচনে জেতার পর ১৯৯৫ সালে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। মধুভাইয়ের দাবি, ‘‘আমি নিজে থেকে বিজেপিতে যাইনি। ১৯৯৫ সালে (নির্দল প্রার্থী হিসাবে) বিপুল ভোটে জেতার পর নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ আমাকে বিজেপিতে আসার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। সে জন্যই এই দলে যোগ দিই।’’ সে সময় মোদী এবং শাহ, দু’জনেই রাজ্য স্তরের নেতা ছিলেন। প্রসঙ্গত, গোটা বিষয়ে এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেনি বিজেপি। যদিও প্রথম প্রার্থিতালিকায় মধুভাই-সহ ৩৮ জন বিধায়ককে টিকিট দেয়নি তারা। তাদের মধ্যে রয়েছেন ৫ মন্ত্রী-সহ বিধানসভার স্পিকারও।