সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পান। ফাইল চিত্র।
সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পানের বিরুদ্ধে পাঁচ হাজার পাতার চার্জশিট জমা দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। সেখানে কাপ্পানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ, নিষিদ্ধ সংগঠন সিমির (স্টুডেন্ট ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়া) সঙ্গে যোগাযোগ ছিল কাপ্পানের। গত বছর গণধর্ষণের খবরের জন্য হাথরস যাওয়ার পথে কাপ্পানকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইনে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়।
এপ্রিলে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স মথুরার এক আদালতে চার্জশিট পেশ করে। যদিও সেই চার্জশিটের প্রতিলিপি পাননি বলেই দাবি কাপ্পানের আইনজীবীর। দায়রা আদালতে সেই নথির প্রতিলিপি চেয়ে আবেদনও জানান তাঁরা। যদিও সেই চার্জশিটের নথির কিছু অংশ ফাঁস হয়ে গিয়েছে।
এক মলয়ালম সংবাদমাধ্যমে কেরলের সাংবাদিক কাপ্পানের লেখা ৩৬টি প্রতিবেদনের উল্লেখ করা হয়েছে চার্জশিটে। অভিযোগ আনা হয়েছে, পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া (পিএফআই) নামে এক সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাপ্পান একের পর এক প্রতিবেদন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে প্রকাশ করেছেন। যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ক্ষেত্রে হানিকর।
কাপ্পানের লেখা এক প্রতিবেদনে ২০১৯ সালে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছিল। চার্জশিটে বলা হয়েছে, ওই প্রতিবেদনটিতে শাহিন বাগে প্রতিবাদীদের উপরে কপিল গুর্জর নামে এক ব্যক্তির গুলিচালনাকে গাঁধী হত্যার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। সেই প্রতিবাদ নিয়ন্ত্রণে দিল্লি পুলিশের ভূমিকারও সমালোচনা করা হয়। শরজিল ইমামকে নিয়েও কাপ্পানের লেখার উল্লেখ করা হয়েছে চার্জশিটে। বলা হয়েছে, গোষ্ঠী সংঘর্ষের ক্ষেত্রে কোনও একটি সম্প্রদায়ের মানুষের কথা তুলে ধরার মাধ্যমে সেই সম্প্রদায়ের মানুষকে প্রভাবিত করা হতে পারে। দায়িত্বশীল সাংবাদিক মোটেই সাম্প্রদায়িক প্রতিবেদনকে প্রশ্রয় দেন না। কিন্তু কাপ্পানের প্রতিবেদনে মুসলিমদের উস্কে দেওয়ার উপাদান ছিল। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ভঙ্গের জন্য পিএফআই যেটা করতে চেয়েছিল।
চার্জশিটে নিজ়ামুদ্দিন মরকজ় বিতর্কেরও উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সিমির সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই ওই প্রতিবেদন করা হয়। যা নিষিদ্ধ সংগঠনটির উদ্দেশ্য চরিতার্থের জন্যই করা হয়েছিল। কাপ্পানের আইনজীবী উইলস ম্যাথিউজ় অবশ্য এই চার্জশিটকে একপেশে বলে উল্লেখ করেছেন। সঙ্গে তুলে ধরেছেন গ্রেফতারের পরে এক বছর কেটে গেলেও কাপ্পান ও তাঁর সঙ্গে যে অন্য তিন অভিযুক্ত রয়েছেন, তাঁদের চার্জশিটের প্রতিলিপি দেওয়া হয়নি।