প্রতীকী ছবি।
সংসার খরচ কে চালাবেন! খুনের দিন রাতে এই নিয়েই ঝামেলা শুরু হয়েছিল শ্রদ্ধা এবং আফতাবের মধ্যে। আর তার জেরেই এই খুন। অভিযুক্ত আফতাবকে জিজ্ঞাসাবাদে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল তদন্তকারী পুলিশের হাতে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক মাস ধরেই বিভিন্ন কারণে যুগলের মধ্যে অশান্তি চলছিল। কিন্তু খুনের দিন অর্থাৎ, ১৮ মে রাতে গৃহস্থালীর সামগ্রী কেনা নিয়ে তাঁদের ঝগড়া শুরু হয়। সংসার কী করে চলবে এবং সংসারের খরচ কে টানবেন, সে প্রসঙ্গও উঠে আসে ঝামেলার মধ্যে। সেই নিয়ে কথা কাটাকাটি গড়িয়ে যায় মারপিটে। এর পরই শ্রদ্ধার বুকের উপর চেপে তাঁর গলা টিপে ধরেন আফতাব। শ্বাসরোধ করে খুন করেন প্রেমিকাকে।
শুধু মাত্র বিয়ে করতে বা প্রেমকে স্বীকৃতি দিতে চাপ দেওয়ার জন্যই কি শ্রদ্ধাকে খুন করেন আফতাব? না প্রেমিকাকে খুনের নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ ছিল? তদন্তে নেমে এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছিল পুলিশ।
এ ছাড়াও ওই যুগলের মধ্যে অন্য এক মহিলাকে নিয়ে ঝামেলা চলছিল বলেও সূত্রের খবর। সম্প্রতি পুলিশের হাতে এমন তথ্য এসেছে যাতে মনে করা হচ্ছে শ্রদ্ধাকে খুনের নেপথ্যে থাকতে পারে অন্য এক মহিলার সঙ্গে আফতাবের ঘনিষ্ঠতা। আর সেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে বাধা দেওয়ার কারণেও শ্রদ্ধার উপর ক্ষোভ জন্মাচ্ছিল আফতাবের। প্রতিবেশী এবং শ্রদ্ধার বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, আফতাব নাকি শ্রদ্ধাকে প্রায়ই মারধর করতেন। শ্রদ্ধার সেই চিৎকার পৌঁছেছিল প্রতিবেশীদের কানেও।
প্রসঙ্গত, ছ’মাস আগে ১৮ মে দিল্লির মেহরৌলিতে একত্রবাসে থাকা প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়ালকারকে খুন করেন তাঁরই প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। এর পর এক বিদেশি ওয়েব সিরিজ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি শ্রদ্ধার মৃতদেহ ৩৫ টুকরো করে ফেলেন। সেই মৃতদেহ সংরক্ষণ করে রাখতে বাড়ির পাশের দোকান থেকে কিনে আনা হয়েছিল নতুন ফ্রিজও। এর পর ১৮ দিন ধরে ছতরপুর ছিটমহলের জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি ছড়িয়ে দিয়ে আসেন আফতাব। সন্দেহ এড়াতে আফতাব রোজ রাত ২টো নাগাদ একটি পলিব্যাগে করে দেহের টুকরো নিয়ে বাড়ি থেকে বার হতেন বলে পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে।
শ্রদ্ধার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে দিল্লি পুলিশ শনিবার আফতাবকে গ্রেফতার করেছে। সেই নিয়েই তদন্ত চলছে।