কংগ্রেস নেতৃত্ব অবশ্য এখনও মনে করছেন, টিআরএস প্রধান কেসিআর আসলে বিজেপিকে ফায়দা করে দিতেই বিরোধী জোটে ভাঙন ধরাতে ময়দানে নেমেছেন। তেলঙ্গানার কংগ্রেস নেতারা বলছেন, রাও নিজেই গত কাল বলেছেন, নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত স্তরে যথেষ্ট বন্ধুত্ব রয়েছে।
ফাইল চিত্র।
বিজেপি বিরোধিতা করতে পারছে না কংগ্রেস— এ কথা বলে আড়াই মাস আগে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুম্বইয়ে গিয়ে এনসিপি, শিবসেনা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। তার পরেই শিবসেনা বলেছিল, কংগ্রেসকে ছাড়া কোনও বিরোধী জোট সম্ভব নয়।
এ বার তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী তথা টিআরএস প্রধান কে চন্দ্রশেখর রাও (কেসিআর) মুম্বইয়ে গিয়ে শরদ পওয়ার, উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে বৈঠকের পর দিনই শিবসেনা ফের মনে করিয়ে দিল, কংগ্রেসকে
ছাড়া জোট সম্ভব নয়। বৈঠকের আগে তিনি অ-কংগ্রেসি, অ-বিজেপি তৃতীয় ফ্রন্টের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। আজ শিবসেনার নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন, ‘‘কখনও বলিনি যে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে জোট তৈরি হবে। যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক জোটের প্রস্তাব করেছিলেন, শিবসেনাই
প্রথম দল যারা বলেছিল, কংগ্রেসকে নিয়ে চলতে হবে। তবে চন্দ্রশেখর রাওয়ের সকলকে নিয়ে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।’’
রবিবারই এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার এবং মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা প্রধান উদ্ধবের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন কেসিআর। তার পরে উদ্ধব জানিয়েছিলেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বিরোধী দলের নেতানেত্রীরা ফের বৈঠকে বসবেন। সূত্রের খবর, এনসিপি প্রধানের শহর বারামতীতে বিরোধী দলের নেতানেত্রীদের বৈঠক ডাকা হতে পারে। সম্প্রতি রাও ও ডিএমকে-প্রধান এম কে স্ট্যালিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলে মমতা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী জোটের প্রার্থী নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। বিরোধী শিবিরের বড় অংশের মত, পওয়ারকেই প্রার্থী করা উচিত। সেই দিক থেকে বারামতীতে বিরোধী দলের বৈঠক ডাকার চিন্তাভাবনা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কংগ্রেস নেতৃত্ব অবশ্য এখনও মনে করছেন, টিআরএস প্রধান কেসিআর আসলে বিজেপিকে ফায়দা করে দিতেই বিরোধী জোটে ভাঙন ধরাতে ময়দানে নেমেছেন। তেলঙ্গানার কংগ্রেস নেতারা বলছেন, রাও নিজেই গত কাল বলেছেন, নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত স্তরে যথেষ্ট বন্ধুত্ব রয়েছে। মোদীকে রাও নিজের ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’ বলেও উল্লেখ করেছেন। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, তাঁর নিজের রাজ্যেই বিজেপি এখন শক্তিশালী হয়ে উঠছে দেখে রাওকে জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপি বিরোধিতা শুরু করতে হয়েছে। কারণ তিনি টের পাচ্ছেন, বিজেপি তেলঙ্গানায় তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে উঠতে পারে।
মহারাষ্ট্রের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নানা পাটোলে বলেন, ‘‘কেন্দ্রে বিজেপি সরকার স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ করছে। সংবিধান ধ্বংস করতে চাইছে। তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রাও বিজেপির বিরুদ্ধে আঞ্চলিক দলগুলিকে এককাট্টা করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু কংগ্রেসকে ছাড়া এই প্রয়াস সফল হবে না।’’ বিরোধী শিবিরের এই টানাপড়েন উস্কে দিতে চাইছে বিজেপি। অন্ধ্রপ্রদেশের বিজেপি নেতা বিষ্ণুবর্ধন রেড্ডির প্রশ্ন, ‘‘রাও একার জোরে বিজেপিকে হারাতে পারবেন না। শিবসেনা বলছে, কংগ্রেসকে ছাড়া বিরোধী জোট সম্ভব নয়। তা হলে কি রাও ‘প্রিন্স চার্মিং’ রাহুল গান্ধীর সামনে নত হবেন?’’