পওয়ার এবং এনসিপির সাম্প্রতিক সমস্যা নিয়ে মতামত দিল শিবসেনার উদ্ধব শিবির। — ফাইল ছবি।
শরদ পওয়ারের এনসিপির বর্তমান সমস্যা নিয়ে মুখপত্র ‘সামনা’র সম্পাদকীয়তে বিশদ মতামত দিল শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠী। তাদের দাবি, আগামিদিনে এনসিপিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্য উত্তরসূরি তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছেন শরদ পওয়ার। মহারাষ্ট্রে বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে হাত মিলিয়েছিল এনসিপি এবং শিবসেনা। সঙ্গে ছিল কংগ্রেস। মহাবিকাশ আঘাডী নামের সেই জোট ক্ষমতা থেকে বিদায় নিয়েছে। শিবসেনার মধ্যে অসন্তোষের অভিঘাতে দলই ভেঙে গিয়েছে ঠাকরেদের। যদিও বিরোধী আসনে বসেও জোট এখনও অটুট। সেই প্রেক্ষিতেই এনসিপির বর্তমান গতিপ্রকৃতির চুলচেরা বিশ্লেষণ করল জোটসঙ্গীর মুখপত্র সামনা।
সামনার সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, ‘‘শরদ পওয়ার একটি বটগাছের মতো। যিনি কংগ্রেস ছেড়ে এনসিপি তৈরি করেছেন এবং তার বিস্তার ঘটিয়েছেন। পওয়ার জাতীয় রাজনীতিতেও একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র এবং তাঁর যে কোনও কথা জাতীয় প্রেক্ষাপটে যথেষ্ট গুরুত্ব রাখে। কিন্তু একটা কথা বলতেই হচ্ছে, তিনি পার্টিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো নেতৃত্ব তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছেন।’’ এখানেই শেষ নয়, সামনায় আরও লেখা হয়েছে, ‘‘তাঁর আশপাশে যে সমস্ত মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের মতিগতি সম্পর্কে তিনি যথেষ্টই ওয়াকিবহাল ছিলেন। পওয়ার নিজেও বলেছিলেন যে, যাঁরা ছেড়ে যেতে চান, তাঁদের আটকানোর কোনও চেষ্টা তিনি করবেন না।’’
শিবসেনার উদ্ধব শিবিরের মুখপত্র সামনায় দাবি করা হয়েছে, শরদ পার্টির পদ ছেড়ে দিতে চাইলেও দলের কর্মী-সমর্থকদের চাপের কাছে মাথা নত করে পদে থেকে গিয়েছেন। গত শুক্রবারেই পওয়ার দলের সভাপতির পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার কথা জানান। পওয়ারের তৈরি করে দেওয়া কমিটিই পওয়ারকে থেকে যাওয়ার কথা জানায়। সামনা মনে করছে, ঠিক যে কর্মী-সমর্থকদের চাপে পওয়ার সরতে পারেননি, ঠিক একই চাপের কারণেই যে সমস্ত নেতারা এনসিপি ছেড়ে বিজেপিতে ভিড়তে চেয়েছেন, তাঁরাও কিছু দিনের জন্য থমকে গিয়েছেন। বস্তুত, শিবসেনার উদ্ধব শিবির মনে করে, বিধায়ক, সাংসদেরা একনাথ শিন্ডের সঙ্গে হাত মেলালেও কর্মী-সমর্থকেরা উদ্ধবের কাছেই থেকে গিয়েছেন। কারণ, দলবদলকে কর্মী-সমর্থকেরা সমর্থন করেন না।
এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও তীক্ষ্ণ ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছে সামনা। তারা লিখেছে, ‘‘বিজেপি বলছে পওয়ারের ইস্তফা নাকি রাজনৈতিক ভাঁওতাবাজি। ওরা বরং নিজেদের প্রভুর দিকে তাকাক, মোদী তো ভাঁওতাবাজির জন্য গোটা দুনিয়ায় আলাদা পরিচিতি পেয়েছেন। বিজেপিই একমাত্র পার্টি যারা অন্য দলের ভাল দেখলে নিজেরা হতাশায় ভোগে!’’
শিবসেনার ঠাকরে শিবিরের মুখপত্রের দাবি, দেশের সব জায়গায় বিজেপি অন্য দল ভেঙে নিজেদের ঘর গুছিয়েছে। কিন্তু বিজেপিতে যোগ দেওয়া মৃত্যুর শামিল বলেও লেখা হয়েছে। সামনা লিখেছে, ‘‘১০০ দিন ভেড়া হয়ে থাকার চেয়ে এক দিন বাঘ হয়ে বাঁচা অনেক গৌরবের। যাঁরা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন তাঁরা এটা বুঝছেন না।’’