উদ্ধব ঠাকরে।
সন্ধ্যায় হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু দুপুরেই আচমকা ভোট! নাগরিকত্ব বিল ‘পেশ’ নিয়ে। কী হবে দলের অবস্থান? ভোট সরকারের পক্ষে হবে না বিপক্ষে? না কি প্রবল বিরোধিতা করে সভাকক্ষ ত্যাগ করে চলে যেতে হবে? অথবা সংসদে বসে থেকেই ভোটদানে বিরত থাকতে হবে! ভোটের জন্য সব সাংসদকে নিজের আসনে বসার ঘোষণা করেছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। কিন্তু শিবসেনার সাংসদেরা সভা ছেড়ে বেরিয়েই গেলেন! আবার ফিরেও এলেন একটু পরে। আক্ষরিক অর্থেই ‘কোন পথে যে চলি, কোন কথা যে বলি’-র অবস্থা।
কিছু দিন আগে পর্যন্তও শিবসেনা ছিল বিজেপির সবচেয়ে পুরনো শরিক। অনুপ্রবেশ রোখার মতো বিষয়ে বিজেপির অবস্থানের প্রবল সমর্থক। কিন্তু উদ্ধব ঠাকরে এখন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন সনিয়া গাঁধী আর শরদ পওয়ারের সমর্থনে। আর এই দুই দলই এখন নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতা করছে। এমনকি উদ্ধবকেও বলেছে বিরোধিতার জন্য। অতএব?
সকালেই সেনার মুখপত্র ‘সামনা’য় আক্রমণ হল নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। অভিযোগ, এই বিলের মাধ্যমে আসলে ‘অদৃশ্য বিভাজন’ করা হচ্ছে হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে। শুধুমাত্র হিন্দুদের নাগরিকত্ব দিয়ে আসলে দেশে ধর্মীয় যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরির উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। এতটা সুর চড়ানোর পর দলের নেতা সঞ্জয় রাউতও টুইটে অমিত শাহের নাম করে আক্রমণ করেন।
বেলা গড়াতেই কর্নাটকের উপনির্বাচনে বিজেপি জিতল। মহারাষ্ট্রে বিজেপি-সেনা জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েও সরকার গড়তে না পারার আক্ষেপ মিটল কিছুটা। কিন্তু ইশারায় সেনাকে বার্তা দিলেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী। ভোটমুখী ঝাড়খণ্ডের প্রচারে গিয়ে মোদী বললেন, ‘‘কর্নাটকের ফল দেখাল, কোনও রাজ্যে জনমতের বিরুদ্ধে গেলে মানুষ শাস্তি দেয়।’’ নাগরিকত্ব বিলে দলের অবস্থান তা-হলে কী হবে? দলের অনেকে ভেবেছিলেন, হয়তো বিরুদ্ধেই ভোট দিতে হবে। বিল পেশের সময় ভোটাভুটি! বাইরে গিয়ে মুম্বইয়েই ফোন করলেন নেতারা। নির্দেশ এল, ‘‘বিলকে সমর্থন করে ভোট দিন।’’ নেতারা ফিরে এলেন, সরকারের পক্ষে ভোটও দিলেন।
ক’দিন আগেই পুণে বিমানবন্দরে মোদীকে স্বাগত জানাতে হাজির ছিলেন উদ্ধব। সেখানে ছিলেন অমিত শাহও। যে অমিত শাহকে কার্যত ‘মিথ্যাবাদী’ বলে মোদীর কাছে নালিশ জানিয়েছিলেন উদ্ধব। কিন্তু বিমানবন্দরের ছবি দেখে অনেকের মনেই প্রশ্ন, তাহলে কী ভবিষ্যতে নতুন সমীকরণ তৈরি হতে পারে?