সৌম্যা বিশ্বনাথন (বাঁ দিকে)। মাধবী বিশ্বনাথন, সৌম্যার মা (ডান দিকে) ছবি: সংগৃহীত।
মেয়ের খুনিদের মৃত্যুদণ্ড হোক, প্রথম থেকেই এটা চাননি তিনি। সাংবাদিক সৌম্যা বিশ্বনাথনের খুনে অপরাধীদের সাজা ঘোষণার পর এ কথাই বলেন তাঁর মা মাধবী বিশ্বনাথন। এই খুনের মামলায় শনিবার দিল্লির আদালত চার জনকে যাবজ্জীবন এবং এক জনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। কেন দোষীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হল না, আদালত তারও ব্যখ্যা দিয়েছে। আদালত জানিয়েছে, এটি বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা নয়, তাই দোষীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হল না।
তাঁর মেয়ের খুনিদের মৃত্যুদণ্ড হল না, এ বিষয়ে সাংবাদিকরা সৌম্যার মায়ের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলেন। তখন তিনি জানান, দোষীদের মৃত্যুদণ্ড হোক, এটা চাইনি। তাঁর কথায়, “আমি এটাই চেয়েছিলাম। আমরা যে অবস্থা, যে কষ্টের মধ্যে দিয়ে দিন কাটিয়েছি এত দিন, আমি চাই আমার মেয়ের খুনিরাও সেই কষ্ট ভোগ করুক।” মাধবী আরও জানান, আদালতের রায়ে তিনি ‘সন্তুষ্ট’, তবে ‘আনন্দিত’ নন। পাশাপাশি এটাও জানিয়েছেন যে, অন্তত এই রায়ের মধ্যে দিয়ে সমাজের কাছে এই বার্তাই যাবে, তুমি যা করবে, তার ফল ভুগতে হবে।
গত ১৯ অক্টোবর রবি কপূর, অমিত শুক্ল, বলজিৎ মালিক, অজয় কুমার এবং অজয় শেট্টিকে দোষী সাব্যস্ত করে দিল্লির নিম্ন আদালত। শুক্রবার সৌম্যা খুনের মামলার রায় দিয়েছে দিল্লির আদালত। দোষীদের মধ্যে রবি, অমিত, বলজিৎ এবং অজয় কুমারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অজয় শেট্টি নামে আর এক দোষীকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কাজ থেকে ফেরার পথে রাত ৩টের সময় দিল্লির বসন্ত কুঞ্জের কাছে খুন হয়েছিলেন বছর পঁচিশের টেলিভিশন সাংবাদিক সৌম্যা। একটি গাড়ির ভিতর থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। সৌম্যার মাথায় গুলির আঘাত ছিল। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মী জিগীষা ঘোষের মৃত্যুর তদন্তে নেমে সৌম্যার খুনের বিষয়ে নির্দিষ্ট কিছু তথ্যপ্রমাণ খুঁজে পায় পুলিশ। জিগীষা খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, তারা সৌম্যার খুনের সঙ্গেও যুক্ত। ২০০৯ সালে পেশ করা ৬২০ পাতার চার্জশিটে দিল্লি পুলিশ জানায় যে, ডাকাতি এবং লুটপাটের জন্যই সৌম্যাকে খুন করা হয়।