কংগ্রেস সভাপতি নিয়োগ নিয়ে এ বার সরব শশী তারুর। —ফাইল চিত্র।
দু’মাস হয়ে গেল কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন রাহুল গাঁধী। কিন্তু এখনও পর্যন্ত উত্তরসূরি খুঁজে বার করতে পারেনি দেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল। তা নিয়ে এ বার অসন্তোষ প্রকাশ করলেন দলের নেতা তথা তিরুঅনন্তপুরমের সাংসদ শশী তারুর। তাঁর কথায়, এই নেতৃত্বহীনতা দলের কর্মী এবং সমর্থকদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
রবিবার সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তারুর বলেন, ‘‘গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে নেতার দিকেই তাকিয়ে থাকেন দলের কর্মী এবং সমর্থকরা। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্ব এবং উদ্যমই সকলকে অনুপ্রেরণা জোগায়। এ কথা সত্য যে, এই মুহূর্তে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব নিয়ে একটা অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে। তাতে আতান্তরে পড়েছেন ওই সব কর্মী এবং সমর্থকরা।’’
এমন পরিস্থিতিতে নেতৃত্ব নিয়ে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির আর গড়িমসি করা উচিত হবে না বলেও মত তারুরের। তাঁর কথায়, ‘‘আর দেরি না করে অবিলম্বে এক জন অন্তর্বর্তিকালীন সভাপতি নিয়োগ করা উচিত কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির। তার পর নতুন করে নেতৃত্ব নির্বাচনের দিকে এগনো উচিত।’’ নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটি (এআইসিসি) এবং প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি (পিসিসি)-র নেতাদের মতামতকেও গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে মত তাঁর।
আরও পড়ুন: কর্নাটকে নয়া মো়ড়, ১৪ বিধায়কের সদস্যপদ খারিজ করলেন স্পিকার, স্বস্তিতে বিজেপি
রাহুল গাঁধীর উত্তরসূরি হিসাবে কোনও তরুণ নেতাকে সভাপতি পদে বসানোর পক্ষে এর আগে সওয়াল করেছিলেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ। এ দিন শশী তারুরও তাতে সায় দেন। তিনি বলেন, ‘‘নতুন সভাপতি আদ্যোপান্ত সাংগঠনিক ব্যক্তি হলে দলকে দলকে হয়ত উদ্ধুদ্ধ করতে পারবেন, দলের ভিত আরও মজবুত করতে পারবেন, কিন্তু দলের পক্ষে নতুন করে ভোটারদের সমর্থন জোগাড় করতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আবার সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা নেই অথচ আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী, এমন কেউ ক্ষমতায় এলে জাতীয় স্তরে দলের পক্ষে সমর্থন হয়ত জোগাড় করতে পারবেন, কিন্তু দলের অন্দরে তেমন সহযোগিতা হয়ত পাবেন না। এমন পরিস্থিতিতে তরুণ কাউকেই তুলে আনা উচিত, দীর্ঘদিন রাজনীতি করতে করতে যাঁর মধ্যে একঘেয়েমি আসেনি, তিনিই সমান উৎসাহে সবদিক সামাল দিতে পারবেন।’’
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে পাক জঙ্গিদের হামলা রুখতেই বাড়তি আধাসেনা, দাবি সরকারি সূত্রের
রাহুল গাঁধী নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় কংগ্রেসের অন্দরে নতুন করে প্রিয়ঙ্কা গাঁধীকে সভাপতি করার দাবি উঠতে শুরু করেছে। অনেকেই মনে করেন, সহজাত ক্যারিশমা রয়েছে প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর মধ্যে, তার জন্যই ঠাকুমা ইন্দিরা গাঁধীর সঙ্গে বার বার তুলনা টানা হয় । এ কথা মেনেছেন শশী তারুরও। কিন্তু গাঁধী পরিবারের কোনও সদস্য দলের দায়ভার নিন, তাতে সায় নেই রাহুল গাঁধীর। সে ক্ষেত্রে তাঁরা সিদ্ধান্ত না বদলানো পর্যন্ত এ ব্যাপারে চিন্তা ভাবনার অবকাশ নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।