হল খোলার আগে নয়া নির্দেশিকা কেন্দ্রের।—ফাইল চিত্র।
দূষণের হাত থেকে রক্ষা পেতে মুখে মাস্ক পরে বাইরে বেরোতেন অনেকেই। কিন্তু সেই মাস্ক যে দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠবে, এক বছর আগেও তা কেউ ভাবতে পারেননি। কিন্তু করোনা সঙ্কটে পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। অত্যাবশ্যক পণ্যে পরিণত হয়ে গিয়েছে মাস্ক এবং স্যানিটাইজার। সিনেমা দেখতে গেলেও এখন থেকে মাস্ক পরেই যেতে হবে। নইলে হলে ঢোকা যাবে না। নয়া নির্দেশিকা (এসওপি) জারি করে জানিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার।
১৫ অক্টোবর থেকে কনটেনমেন্ট জোনের বাইরে সিনেমা হল, মাল্টিপ্লেক্স এবং থিয়েটার খুলে যাচ্ছে। তার আগে মঙ্গলবার সকালে নিয়মবিধির একটি তালিকা প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। তাতে বলা হয়েছে, অডিটোরিয়ামের বাইরে, কমন এরিয়া এবং ওয়েটিং এরিয়া, সব জায়গায় অন্তত ছ’ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সকলের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। বাইরে লাইন দেওয়া থেকে, হলের ভিতর বসে ছবি দেখা, মুখে মাস্ক থাকতে হবে সারা ক্ষণ।
সিনেমা হলের প্রবেশ ও বাহির দ্বার এবং কমন এরিয়া, সব জায়গাতেই হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে ওই নির্দেশিকায়। তবে গোটা ব্যাপারটাই হতে হবে ‘টাচ-ফ্রি মোডে’। অর্থাৎ এমন ব্যবস্থা করতে হবে যাতে হাত দিয়ে স্পর্শ না করেই বোতল থেকে স্যানিটাইজার নেওয়া যায়। সংক্রমণ এড়াতে অনলাইন টিকিট বুকিং, খাবার এবং পানীয় কেনার সময় ই-ওয়ালেট বা QR কোড ব্যবহার করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আরও পড়ুন: ‘অনধিকার চর্চা নয়’, হাথরস নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের আধিকারিককে হুঁশিয়ারি কেন্দ্রের
টিকিট বুকিংয়ের সময় গ্রাহকের ফোন নম্বর লিপিবদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সিনেমা হল এবং অডিটোরিয়াম কর্তৃপক্ষকে, যাতে কেউ আক্রান্ত হলে তাঁর সংস্পর্শে কে কে এসেছেন, তাঁরা কোথায় থাকেন, কোথাও গিয়েছেন কি না, সে সব খুঁজে নথিবদ্ধ করা যায়। হাঁচি-কাশির সময় যাতে রুমাল, টিস্যু পেপার বা কনুই দিয়ে মুখ-নাক ঢাকা থাকে এবং সেই টিস্যু পেপার যাতে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলা হয়, তা-ও মেনে চলতে বলা হয়েছে।
কোনও রকম অসুস্থতা দেখা দিলে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংশ্লিষ্ট এলাকার হেল্পলাইনে ফোন করে জানানোর নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। যত্রতত্র থুতু ফেলা যাবে না। সকলের ফোনে আরোগ্য সেতু অ্যাপ থাকতে হবে। হলে ঢোকার মুখে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক। শুধুমাত্র উপসর্গহীনদেরই হলে ঢুকতে দেওয়া হবে। সাধারণত লাইন দিয়েই হল থেকে বেরিয়ে আসেন দর্শক। কিন্তু নির্দিষ্ট সারি ধরে যদি দর্শকদের বেরনোর ব্যবস্থা করা যায়, সে ক্ষেত্রে ভিড় খানিকটা সামাল দেওয়া যাবে বলে মত সরকারের।
মাল্টিপ্লেক্সগুলিতে একসঙ্গে অনেকগুলি প্রেক্ষাগৃহে ছবি চালানো হয়। সে ক্ষেত্রে একই সময়ে ছবি শুরু হয়, বিরতিও হয় একই সময়ে, আবার সিনেমা ভাঙেও একই সময়ে। তাতে এক সঙ্গে অনেক মানুষের জটলা বাঁধার সম্ভাবনা থাকে। তাই তা এড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। হলকর্মীদের ক্ষেত্রে নিয়মিত স্যানিটাইজেশন, গ্লাভস, বুট, মাস্ক এবং পিপিই-র বন্দোবস্ত করতে হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। একই সঙ্গে সিনেমা হলের বাইরে, ভিতরে, বিরতির সময় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার করা নিয়ে দর্শককে সতর্ক করতে হবে।
আরও পড়ুন: হাথরস কাণ্ডে আদালতের নজরদারিতে তদন্তের দাবি, মামলা শুনবে সুপ্রিম কোর্ট
আপাতত কনটেনমেন্ট জোনগুলির বাইরেই সিনেমা হল, মাল্টিপ্লেক্স এবং থিয়েটার খোলার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে মোট আসনসংখ্যার ৫০ শতাংশ ভরানো যাবে। বাইরে থেকে খাবার নিয়ে ঢুকতে পারবেন না দর্শক। তবে প্যাকেটজাত খাবার নিয়ে হলে ঢোকা যাবে। এ ছাড়াও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে, রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি নিজেদের মতো অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে পারে।