শরদ পাওয়ার। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটে মহারাষ্ট্রের দশটি আসনে লড়ে শরদ পওয়ারের এনসিপি জিতেছে ৮টিতে। আর প্রতিরক্ষ অজিত পওয়ারের এনসিপি চারটিতে লড়ে পেয়েছে মাত্র একটি আসন। লোকসভার ফলাফল ঘোষণার পর অজিত শিবিরের বিধায়কদের ভিতরেও দল ছাড়ার প্রবণতা প্রকাশ পেতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে অজিত শিবির ও মহারাষ্ট্রে তাঁর নিজের জোট শরিকদের বার্তা দিলেন শরদ পওয়ার। জানিয়ে দিলেন, রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা ভোটে এ বার আরও বেশি আসনে লড়তে চাইছে তাঁর দল।
গত কাল পর পর দু’টি বৈঠকে দলের নেতাদের সামনে পওয়ার যা বলেছেন, তাতে স্পষ্ট, লোকসভা ভোটে নতুন করে শক্তি যে শক্তি সঞ্চয় করেছে তাঁর দল, তার লাভ বিধানসভা ভোটে তুলে নিতে চান তিনি। পুণে জেলায় দলের পদাধিকারীদের সঙ্গে বৈঠকে শরদ জানিয়েছেন, নিজেদের জোট এমভিএ-র সাফল্যের কথা ভেবে লোকসভা ভোটে কম আসনে লড়তে রাজি হয়েছিলেন তিনি। তবে বিধানসভায় পরিস্থিতি আলাদা হবে। এরপর দলের বিধায়ক ও নবনির্বাচিত সাংসদদের সঙ্গেও বিধানসভা ভোটের রণনীতি নিয়ে আলোচনা করেন শরদ।
পুণের প্রথম বৈঠকটিতে উপস্থিত ছিলেন এনসিপি (শরদ পওয়ার)-এর নেতা প্রশান্ত জগতাপ। তিনি পুণের শহরাঞ্চলে দলের দায়িত্বে রয়েছেন। তাঁর কথায়, শরদ পওয়ার বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছেন, উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা ও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট যাতে অটুট থাকে, সে জন্য লোকসভা ভোটে কম আসনে লড়েছিল এনসিপি। কিন্তু বিধানসভায় ব্যাপারটা অন্যরকম হবে।
দলীয় সূত্রের খবর, পুণে, বারামতী, মাভাল, শিরুর লোকসভার অন্তর্গত বিধানসভা কেন্দ্রগুলির ফলাফল বিশ্লেষণ করেছেন শরদ। দ্বিতীয় বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা জানান, সাংসদ ও বিধায়কদের বিধানসভা ভোটের জন্য প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন শরদ।
এনসিপি (শরদ পওয়ার)-র মহারাষ্ট্র শাখার প্রধান জয়ন্ত পাটিল অবশ্য সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিধানসভা ভোটে ঠিক কতগুলি আসনে তাঁদের দল লড়তে চাইছে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরই এমভিএ-র ভিতরে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা শুরু করবেন তাঁরা। পাশাপাশি, জোটের ভিতরে সমন্বয়ের বার্তা দিতে শরদের দলের আর এক নেতা অনিল দেশমুখ বলেন, ‘‘এমভিএ-র ভিতরে বড় দাদা কিংবা ছোট ভাই কেউ নেই। সেখানে সকলেই সমান।’’ তবে মহারাষ্ট্রের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত অনেকেই মনে করছেন, বিধানসভায় বেশি আসনে লড়ার বিষয়টি উস্কে দিয়ে আসলে দু’টি পক্ষকে বার্তা দিতে চেয়েছেন পওয়ার। প্রথমত, অজিত পওয়ারের শিবিরে থাকা বিধায়কদের তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, লোকসভার পর বিধানসভা ভোটেও নিজেদের শক্তি বাড়িয়ে নিতে উদ্যোগী হয়েছেন তিনি। ফলে এই পরিস্থিতিতে শিবির বদলের বিষয়ে তাঁদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পাশাপাশি, উদ্ধব ঠাকরের দল এবং কংগ্রেসকেও পওয়ার নিজের শক্তিবোঝাতে চেয়েছেন।
তাৎপর্যের বিষয় হল, লোকসভা ভোটে মহারাষ্ট্রের যে আসনটির দিকে সকলেরই নজর ছিল, সেই বারামতীতে শরদ পওয়ার নিজের মেয়ে সুপ্রিয়া সুলের জয় নিশ্চিত করিয়েছেন ঠিকই। তবে বারামতী বিধানসভা আসনটিতে এখনও প্রতিনিধিত্ব করেন তাঁর ভাইপো ও প্রতিদ্বন্দ্বী অজিত পওয়ার। আসন্ন বিধানসভা ভোটে সেই আসনটিতে কী হবে, তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা তুঙ্গে। জয়ন্ত পাটিল সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘বারামতী বিধানসভা আসনটিতে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে শরদ পওয়ারইসিদ্ধান্ত নেবেন।’’