এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার। ফাইল চিত্র।
উনিশটি বিরোধী দলের নেতা, সাংসদেরা তেরঙ্গা মিছিল করে পাশাপাশি বসে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন— তার এক সপ্তাহও অতিক্রান্ত হয়নি। এরই মধ্যে বিরোধী ঐক্যে মেঘ ঘনাতেদেখা যাচ্ছে।
গৌতম আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি)-র তদন্তের দাবিতে কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের পাশে গোড়া থেকেই ছিল না তৃণমূল। এ বার আচমকাই বেসুরো এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার। তাঁর মতে, জেপিসি-র দাবি অর্থহীন। হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আদানিদের নিশানা করা হয়েছে। এখানেই থেমে থাকেননি এনসিপি প্রধান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শিক্ষাগত ডিগ্রি নিয়ে চলতি বিতর্কেও ভিন্ন সুর তাঁর। বলছেন, “প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা কোনও বড় বিষয় নয়। শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রিত্বের কোনও সম্পর্ক নেই।” তাঁর সংযোজন, “বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করার অনেক গুরুতর বিষয় আছে। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা তার কাছে তুচ্ছ। দেশকে ধর্ম ও জাতে ভাগ করা হচ্ছে। জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। কৃষকেরা ফসলের দাম পাচ্ছে না। এসব বিষয়ে আলোচনা, আন্দোলন হতে পারে।”
প্রধানমন্ত্রীর ডিগ্রি বিতর্কে পওয়ার পাশে পেয়েছেন আর এক বিরোধী নেতা আরএলডি-র জয়ন্ত চৌধুরীকে। টুইট করে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মতে শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে যে বিশেষ প্রচারটি শুরু হয়েছে তা অভিজাততন্ত্রের।
শরদ পওয়ারের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে আজ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটা নিয়ে কিছু মন্তব্য করব না। তাঁরা যেটা বলছেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার। আমি এ নিয়ে কিছু বললে সেটা যথাযথ ভাবে তুলে ধরব।” কংগ্রেস নেতা পবন খেরার কথায়, “কোনও নির্বাচিত প্রতিনিধির ডিগ্রি থাকা উচিত কি না সেটা ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে এটাও ঠিক ডিগ্রির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে মিথ্যাচার অন্যায়।” প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা অবশ্য গোটা বিরোধী শিবিরের বিষয় নয়। শুধু আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল স্লোগান দিয়েছেন, ‘দেশে শিক্ষিত প্রধানমন্ত্রী চাই’।’ গত কালই পওয়ারের ভাইপো তথা মহারাষ্ট্রের বিরোধী দলনেতা অজিত পওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে বিতর্কে প্রধানমন্ত্রীর পাশেই দাঁড়ান। অজিতের শিক্ষাগত যোগ্যতা দ্বাদশ শ্রেণি পাশ।
জেপিসি নিয়ে পওয়ারের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ কংগ্রেসের যুক্তি, আদানিদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সঙ্গে জাতীয় স্বার্থ জড়িত। সংসদ এই অভিযোগ থেকে মুখ ঘুরিয়ে থাকতে পারে না।