উদ্ধবের মন্ত্রিসভায় এনসিপির-ই পাল্লা ভারী। —ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্রে উদ্ধব ঠাকরের সরকারে এ বার স্বরাষ্ট্র দফতরের দায়িত্বও হাতে পেতে পারে শরদ পওয়ারের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি)। দলের নেতা অনিল দেশমুখ রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হতে পারেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে অর্থ এবং সেচ দফতরও এনসিপি-র হাতেই উঠতে পারে। বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ে শিবসেনা-এনসিপি এবং কংগ্রেসের ‘মহা আঘাডি জোট’-এর পাঁচ ঘণ্টা ব্যাপী বৈঠকে এমনটাই স্থির হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
মহারাষ্ট্রে অবিজেপি সরকার গড়তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল শরদ পওয়ারের। কংগ্রেস এবং শিবসেনার মতো দু’টি ভিন্ন মতাদর্শের দলকে এক ছাতায় আনার কাজটা অত্যন্ত নিপুণ ভাবে সেরেছিলেন তিনি। এমনকি ভাইপো অজিতের পদক্ষেপে মাঝপথে জোট ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হলেও, দক্ষ হাতে তিনিই পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিলেন।
যে কারণে জোট সরকারে এই মুহূর্তে এনসিপি-র গুরুত্ব শিবসেনাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। যাবতীয় বিতর্ক পিছনে ফেলে দিন কয়েক আগেই উদ্ধবের মন্ত্রিসভায় শপথ নিয়েছেন অজিত পওয়ার। প্রথমে সোনা গিয়েছিল তিনি উপমুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন। পরে জল্পনা, তিনি পাচ্ছেন অর্থমন্ত্রক। মন্ত্রিত্বের নিরিখেও বাকি দুই শরিকের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে এনসিপি। উদ্ধবের মন্ত্রসভায় এই মুহূর্তে ১৬টি পদ রয়েছে তাদের। শিবসেনার রয়েছে ১৫টি। তার মধ্যেই স্বরাষ্ট্র, অর্থ এবং সেচ মন্ত্রকও এনসিপি-র হাতে যেতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে এনসিপি নেতা অনিল দেশমুখের নাম একরকম নিশ্চিত। সেচ ও অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্ব নিয়ে দলের অন্দরে আলোচনা চলছে। তবে নগরোন্নয়ন মন্ত্রক শিবসেনারই হাতে থাকছে। দলের নেতা একনাথ শিন্দে ওই মন্ত্রক পেতে পারেন। শিল্প দফতরের দায়িত্ব পেতে পারেন শিবসেনার সুভাষ দেশাই। শুরু থেকেই রাজস্ব দফতর চেয়ে আসছিল কংগ্রেস। তাদের বালাসাহেব থোরাট ওই দফতরের দায়িত্ব পেতে পারেন। শ্রম ও শুল্ক দফতর যেতে পারে এনসিপির দিলীপ ওয়ালসে পাটিল। আবাসন ও সামাজিক ন্যায় বিভাগ যেতে পারে এনসিপি-র কাছে। দলের নেতা জিতেন্দ্র অহওয়াদ আবাসন বিভাগ পেতে পারেন। ধনঞ্জয় মুন্ডে পেতে পারেন সামাজিক ন্যায় বিভাগ। কংগ্রেসের বর্ষা গায়কোয়াড় চিকিৎসা পঠন-পাঠন দফতর।
তবে মন্ত্রিসভায় এনসিপি-র কর্তৃত্ব নিয়ে শিবসেনার অন্দরেই মতবিরোধ শুরু হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। মন্ত্রিত্ব হাতছাড়া হওয়ায় ভাস্কর যাদব, প্রতাপ সরনায়ক, দলের মুখপাত্র সঞ্জয় রাউতের ভাই সুনীল রাউত, প্রকাশ অবিৎকার এবং তানাজি সবন্তের মতো বিধায়করা ইতিমধ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গিয়েছে। ভাইকে মন্ত্রিসভায় জায়গা না দেওয়ায় খোদ সঞ্জয় রাউত উদ্ধবের উপর চটেছেন এবং সেই কারণে মন্ত্রীদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তাঁকে দেখা যায়নি বলে জল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও সঞ্জয় রাউত নিজে তা অস্বীকার করেছেন। মতবিরোধের খবর উড়িয়ে দিয়েছেন শরদ পওয়ার নিজেও। তাঁর দাবি, ‘‘কার হাতে কোন দায়িত্ব যাবে, তা স্থির হয়ে গিয়েছে। আগে থেকেই সব ঠিক ছিল। শুক্রবার সেই সংক্রান্ত ঘোষণা হতে পারে। এ নিয়ে কোথাও কোনও অসন্তোষ নেই।’’