ছবি: এএফপি।
দিল্লির ভোট মিটে যাওয়ার পরে এখন সুপ্রিম কোর্টের দিকে তাকিয়ে শাহিন বাগ।
সর্বোচ্চ আদালত ইতিমধ্যেই বলেছে, আন্দোলনের অধিকার অবশ্যই আছে। কিন্তু তা বলে এ ভাবে রাস্তা অবরোধ করে অনির্দিষ্ট কাল বসে থাকা যায় না। তাতে ভোগান্তি হয় সাধারণ মানুষের। তার বদলে বরং কোনও একটি নির্দিষ্ট জায়গাতেই (যেখানে জনজীবন ব্যাহত না-হয়) এ ধরনের বিক্ষোভ-আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া যুক্তিযুক্ত। এখন ১৭ ফেব্রুয়ারির শুনানির শেষে এ নিয়ে সর্বোচ্চ আদালত কী বলে, সে দিকেই সাগ্রহে তাকিয়ে শাহিন বাগের আন্দোলনকারীরা।
প্রায় দু’মাস ধরে শাহিন বাগে জাতীয় সড়ক রুখে সিএএ-এনআরসি বিরোধী বিক্ষোভ চলছে। রোজ যানজটের শিকার হয়ে ক্ষোভ জমছে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে। এ নিয়ে ভোট-প্রচারে নাগাড়ে আক্রমণ শানিয়ে গিয়েছে বিজেপি। এখন ভোট মিটে যাওয়ার পরে স্বাভাবিক ভাবেই বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে, এ ভাবে রাস্তা আটকে কত দিন প্রতিবাদ চলবে? আন্দোলনের অন্যতম উদ্যোক্তা শাহিন কওসরের কথায়, ‘‘১৭ তারিখের শুনানির দিকে তাকিয়ে রয়েছি। জানি, এই জাতীয় সড়ক রোখায় অসুবিধায় পড়ছেন অনেকে। কিন্তু আমাদেরও দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। তার দায় সরকারের নয় কি?’’
আরও পড়ুন: তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে রবিবার শপথ নেবেন কেজরী
অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, শাহিন বাগকে পাখির চোখ করে দিল্লির ভোট-ময়দানে লড়ে নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের। তাকে নৈতিক জয় হিসেবে সামনে রেখে কি তবে রাস্তা-রোখা আন্দোলন থেকে সরে আসবে শাহিন বাগ? আন্দোলনকারীরা বলছেন, এই লড়াই তাঁদের এ দেশে টিকে থাকার লড়াই। তাই রাতারাতি তাতে দাঁড়ি টানা শক্ত। তাঁদের ইঙ্গিত, হয়তো অনির্দিষ্ট কাল রাস্তা আটকে রাখা যাবে না। কিন্তু দুম করে বন্ধ করা যাবে না বিক্ষোভও। দ্বিতীয়ত, রাস্তা থেকে ওঠার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্তের আগে সুপ্রিম কোর্টের রায় দেখতে চাইছেন প্রতিবাদকারীরা। তাঁদের একাংশের দাবি, ‘‘এমনিতেই এই আন্দোলনের গায়ে রাজনীতির রং লাগানোর চেষ্টা হয়েছে যথেষ্ট। তার উপরে ভোটের পরেই হঠাৎ এখন আন্দোলনে দাঁড়ি টানলে, সে কথা হয়তো ফের জোর দিয়ে বলা হবে।’’ অর্থাৎ, রাস্তা থেকে উঠতে হলেও সর্বোচ্চ আদালতের কথাতেই তা করার পক্ষপাতী তাঁরা।
এ দিকে ভীম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ এ দিনই শাহিন বাগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন জমা করেছেন। শাহিন বাগে রাস্তা খালি করার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা হয়েছে, তা কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে ষড় করে করা হয়েছে বলে চন্দ্রশেখরের দাবি। তাঁর অভিযোগ, শাহিন বাগ আন্দোলনের প্রতি মানুষের মন যাতে বিষিয়ে যায়, তার জন্য ইচ্ছে করে বিকল্প রাস্তাগুলো বন্ধ করে রেখেছে সরকার। দিল্লির সঙ্গে নয়ডা এবং ফরিদাবাদের সংযোগকারী রাস্তা খুলে দিলে যানজট কমে যায়। কিন্তু সরকার তা করছে না।