আরিয়ান খানের আইনজীবী মুকুল রোহতগি। গ্রাফিক— সনৎ সিংহ।
আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ নেই। অযথা মামলাকে টেনে লম্বা করার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (এনসিবি)। শাহরুখ-তনয় বাড়ি ফেরার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এমনই মন্তব্য করলেন মাদক মামলায় তাঁর আইনজীবী তথা দেশের প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি।
বেশ কয়েক সপ্তাহ জেলে কাটানোর পর অবশেষে বাড়ি ফিরেছেন আরিয়ান। দায়রা আদালতে জামিন খারিজের পর আরিয়ান আবেদন করেন বম্বে হাই কোর্টে। সেখানে শাহরুখ-পুত্রের হয়ে সওয়াল করেন প্রবীণ আইনজীবী মুকুল রোহতগি। সেই মুকুলই এ বার মুখ খুললেন এনসিবি-র কর্মপদ্ধতি ও নির্দিষ্ট মামলায় মানসিকতা নিয়ে। প্রশ্ন তুললেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাজের ধরন নিয়েও।
একটি সাক্ষাৎকারে মুকুল বলেন, ‘‘এই মামলায় বড় অঙ্কের মাদক গ্রহণ, পরিবহণ বা সঙ্গে রাখার প্রশ্ন নেই। আরিয়ানের কাছ থেকে কোনও প্রকার মাদক উদ্ধার হয়নি। কিন্তু তাও এনসিবি চেষ্টা করেছিল, মামলাটিকে মাদকের বাণিজ্যিক ব্যবহার হিসেবে দেখাতে। আমার মনে হয়, এটা মামলাকে অযথা টেনে লম্বা করার সামিল।’’
মুকুলের দাবি, এ বিষয়ে আইনে স্পষ্ট বলা আছে, কেউ যদি সামান্য পরিমাণ মাদক গ্রহণ করেন, তা হলে তাঁকে আলাদা ভাবে দেখতে হবে। তাঁর মতে, ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এই পার্থক্য করতে ব্যর্থ। তারা কেবল মাদকের বাণিজ্যিক ব্যবহার দেখতে ব্যস্ত।’
দায়রা আদালতের নির্দেশ নিয়েও নিজের মত ব্যক্ত করেছেন দেশের প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল। মুকুল বলেন, ‘‘এই মামলায় ‘কনশাস পজেশন’-এর সংজ্ঞাকে এতটাই দীর্ঘায়িত করা হয়েছে, যাঁরা আরিয়ানের সম্পূর্ণ অপরিচিত, তাঁদেরও আমার মক্কেলের সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলে দেখানো হয়েছে। কারণ বাস্তবে এনসিবি-র হাতে এমন কোনও তথ্য নেই যাতে প্রমাণ হয়, ঘটনায় কোনও সিন্ডিকেট জড়িত।
রোহতগির মতে, আসল সমস্যা হল প্রথমেই জামিন খারিজ হয়ে যাওয়া। এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘১৯৭৮ সালেই শীর্ষ আদালত স্পষ্ট বলে দিয়েছিল, জামিনই নিয়ম, জেল ব্যতিক্রম।’’ মুকুলের কথায়, ‘‘যদি সামান্য পরিমাণ মাদক পাওয়া যায় এবং সেই ব্যক্তি মাদক গ্রহণের কথা কবুল করেন তা হলে তাঁকে গ্রেফতার করা যায় না। যদি সেই ব্যক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রে যেতে রাজি থাকেন, তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। ২০০১ সালের আইনে এ কথাই বলা আছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে এ সবের আর গুরুত্ব নেই। তারা সকলকেই একই ভাবে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে।’’