অযোধ্যা রায় পুনর্বিবেচনার বিরুদ্ধে শাবানা-নাসিরউদ্দিনরা।
অযোধ্যা মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড। এ বার তাদের সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় এগিয়ে এলেন শাবানা আজমি, নাসিরউদ্দিন শাহের মতো বিশিষ্ট নাগরিকদের একাংশ। তাঁদের মতে, বিবাদ জিইয়ে রাখলে তা মুসলিম সমাজেরই ক্ষতি করবে।
অভিনেতা শাবানা আজমি, নাসিরউদ্দিন শাহ, সাংবাদিক জাভেদ আনন্দ-সহ ইসলামি গবেষক, ব্যবসায়ী, কবি, থিয়েটার ও সঙ্গীতশিল্পী মিলিয়ে প্রায় ১০০ জনের তরফে সোমবার একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। তাতে বলা হয়, ‘সিদ্ধান্তে পৌঁছতে আইনের চেয়ে বিশ্বাসকেই প্রাধান্য দিয়েছে আদালত। তা নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়, সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং ধর্ম নিরপেক্ষ সংগঠনগুলির অসন্তোষ বুঝতে পারছি আমরা। আদালতের রায় ত্রুটিপূর্ণ মানছি আমরা। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস, এই বিবাদ জিইয়ে রেখে কোনও লাভ নেই। এতে ভারতীয় মুসলিমদেরই ক্ষতি হবে।’
মন্দির-মসজিদ বিবাদ নিয়ে ব্যস্ত থাকলে, তাতে সঙ্ঘ পরিবারেরই সুবিধা হবে বলেও দাবি করা হয় ওই বিবৃতিতে। তাতে বলা হয়, ‘সব কিছু পিছনে ফেলে মুসলিমদের এগিয়ে যেতে বলছেন কেউ কেউ। কিন্তু আমাদের আর্জি, মন্দির-মসজিদ বিবাদ ছেড়ে বেরিয়ে আসুন আপনারা। অন্যথায় সঙ্ঘ পরিবারের ধর্ম নিরপেক্ষ গণতন্ত্রকে হটিয়ে হিন্দু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য চাপা পড়ে যাবে। আমাদের বিশ্বাস, এই বিবাদ টেনে নিয়ে গেলে মুসলিম বিদ্বেষ বাড়বে। ইসলাম ভীতি তৈরি হবে, যা সাম্প্রদায়িক বিভাজনে মদত জোগাবে।’
আরও পড়ুন: মহা-নাটকের যবনিকা পতন, মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন দেবেন্দ্র ফডণবীস
দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলায় গত ৯ নভেম্বর চূড়ান্ত রায় শোনায় সুপ্রিম কোর্ট। তাতে রাম মন্দির গড়তে বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি তুলে দেওয়া হয় রাম লালা বিরাজমানের হাতে। সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে মসজিদের জন্য অন্যত্র ৫ একর জমি দিতে বলা হয় কেন্দ্রকে।
আরও পড়ুন: সরকার পড়তে যাচ্ছে, ইঙ্গিত মিলে গিয়েছিল অজিত পওয়ারের ইস্তফাতেই
শুরু থেকেই আদালতের এই রায় নিয়ে দ্বিধা বিভক্ত মুসলিম সমাজ। সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড যদিও এই রায় পুনর্বিবেচনার বিরুদ্ধে। কিন্তু ১৭ নভেম্বর বৈঠকের পর বিষয়টি পুনর্বিবেবেচনা করে দেখতে আদালতে আর্জি জানানোর সিদ্ধান্ত নেয় অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড এবং মৌলানা আরশাদ মদানির নেতৃত্বাধী জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দ। এ বার সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলেন শাবানা-নাসিরউদ্দিনরা।