প্রোজ্জ্বল রেভান্না। —ফাইল চিত্র।
অশ্লীল ভিডিয়োকাণ্ডে আরও বিপাকে পড়লেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার পৌত্র প্রোজ্জ্বল রেভান্না। আগেই তরুণ এই জনতা দল সেকুলার (জেডিএস) নেতার বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছিল বিরোধী দলগুলি। এ বার প্রোজ্জ্বলকে নিয়ে ক্ষোভের কথা উঠে এল জোট শরিক বিজেপির এক নেতার কথাতেও। কর্নাটকের ওই বিজেপি নেতা সম্প্রতি দাবি করেছেন, তাঁর কাছে থাকা একটি পেনড্রাইভে ৩০০০টি অশ্লীল ভিডিয়ো রয়েছে। সেখানে প্রোজ্জ্বল এবং বেশ কয়েক জন আধিকারিকের যৌন কেলেঙ্কারির প্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। এমনকি, ওই ভিডিয়ো দেখিয়ে পরবর্তী সময়েও মহিলাদের যৌন নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে দেবগৌড়া-পৌত্রের বিরুদ্ধে।
অভিযোগকারী বিজেপি নেতা দেবরাজ গৌড় ২০২৩ সালের কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচনে হোলেনরসিপুরা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী ছিলেন। জেডিএস প্রার্থীর কাছে তিনি হেরে যান। এই লোকসভা নির্বাচনে জোট বেঁধে লড়ছে বিজেপি এবং জেডিএস। জেডিএসের ঘাঁটি হাসনের বিদায়ী সাংসদ প্রোজ্জ্বল এ বার ফের ওই কেন্দ্র থেকেই প্রার্থী হয়েছেন। আর ওই কেন্দ্রেরই অন্তর্গত হোলেনরসিপুরা। ফলে জেডিএস এবং বিজেপি দুই শিবিরেই অস্বস্তি বেড়েছে
দেবরাজ দাবি করেছেন, তিনি গত ৮ ডিসেম্বরই কর্নাটকের বিজেপি সভাপতি বিওয়াই বিজেয়েন্দ্রকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন, প্রোজ্জ্বল-সহ বেশ কয়েক জন জেডিএস নেতার বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ রয়েছে। সেই চিঠিও সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। চিঠিতে দেবরাজ লিখছেন, আমরা যদি জেডিএস-এর সঙ্গে জোট করি এবং এক জন জেডিএস প্রার্থীকে হাসন কেন্দ্র থেকে লোকসভায় প্রার্থী করি তবে এই ভিডিয়োগুলো ব্রহ্মাস্ত্র হিসাবে ব্যবহৃত হবে এবং আমরা ধর্ষক পরিবারের সঙ্গে জোট করেছি বলে কটাক্ষ করা হবে।” তবে এই চিঠির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
ক্ষোভের আগুন জ্বলছে জেডিএস-এর অন্দরেও। দলের বিধায়ক শরণগৌড় কান্দকুর দলের প্রধান দেবগৌড়ার কাছে প্রোজ্জ্বলকে সাসপেন্ড করার আর্জি জানিয়েছেন। যাঁকে ঘিরে এই বিতর্ক, সেই প্রোজ্জ্বল দেশ ছেড়েছেন বলে শোনা গিয়েছে। রবিবার সকালেই নাকি বেঙ্গালুরু ছেড়ে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় দফার নির্বাচনেই কর্নাটকের হাসন কেন্দ্রে ভোট হয়ে গিয়েছে।
প্রথম দফার ভোটের আগে হাসন কেন্দ্রে বেশ কয়েকটি ‘অশ্লীল’ ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে যায়। তাতেই নাম জড়ায় জেডিএস প্রার্থী প্রোজ্জ্বলের। বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়তেই ঘটনাটির তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। শনিবার তিনি এক্স (পূর্বতন টুইটার) হ্যান্ডলে জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার এই ঘটনাটির তদন্তের জন্য একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছে। মহিলা কমিশনও এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে। যৌন নির্যাতনের অভিযোগে প্রোজ্জ্বলের সঙ্গে নাম জুড়েছে দেবগৌড়ার পুত্র তথা প্রোজ্জ্বলের পিতা এইচডি রেভান্নারও। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বাড়ির রাঁধুনির অভিযোগের ভিত্তিতেই হোলেনারাসিপুর থানায় মামলা রুজু হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।