NRC

এনআরসিতে থাকলেও আঁধারে তাঁদের আধার

অসমে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) তৈরির কাজ ঝুলে থাকায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বাপন দাস, সুশীল মালাকারের মত ৩৮ লক্ষাধিক মানুষের আধার কার্ড পাওয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলচর শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২১ ০৬:০২
Share:

প্রতীকী ছবি।

লক্ষ্মীপুরের বাপন দাস এলাকার যুবকদের আত্মনির্ভর করতে বড়সড় প্রকল্প হাতে নিতে চান। সে জন্য প্রয়োজন প্রচুর টাকার ব্যাঙ্ক-ঋণ। চাইছেন ভর্তুকি যুক্ত কেন্দ্রীয় ঋণের সুবিধে। কিন্তু তাঁর মুশকিল হল, অধিকাংশ ক্ষেত্রে আধার নম্বর ছাড়া আবেদনেরই সুযোগ নেই।

Advertisement

কাটিগড়ার সুশীল মালাকারের দিন আনি দিন খাই অবস্থা। ঝড়ে কখন ঘর পড়ে যায়, আতঙ্কে দিন কাটে তাঁর। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর চেয়েছিলেন। পঞ্চায়েত কর্তারা জানিয়ে দিয়েছেন, নতুন নির্দেশিকায় আধার কার্ড ছাড়া ওই প্রকল্পের সুবিধে মিলবে না। সঙ্গে শুনেছেন, খাদ্য সুরক্ষার কার্ডে যে রেশন পাচ্ছেন, আধার না থাকলে তা-ও মিলবে না আগামী মাস থেকে।

অসমে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) তৈরির কাজ ঝুলে থাকায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বাপন দাস, সুশীল মালাকারের মত ৩৮ লক্ষাধিক মানুষের আধার কার্ড পাওয়া। তাঁদের মধ্যে ১৯ লক্ষ ৬ হাজার ৬৫৭ জনের নাম ওঠেনি এনআরসিতে। আরও ১৯ লক্ষ মানুষের নাম এনআরসিতে উঠলেও আধার কার্ড হচ্ছে না।

Advertisement

এনআরসি-র চূড়ান্ত খসড়ায় ৪০ লক্ষ ৭ হাজার ৭০৭ জনের নাম বাদ পড়েছিল। তাঁদের নথিপত্র পুনঃপরীক্ষার জন্য ডাকা হয়েছিল। তখন সকলের বায়োমেট্রিক করানো হয়। যাঁরা আগেই আধার কার্ড করে নিয়েছিলেন, তাঁদের অবশ্য এই যন্ত্রণা ছুঁতে পারেনি। কিন্তু সেই সংখ্যাটা ২ লক্ষের বেশি নয়। বাকি ৩৮ লক্ষ মানুষের বায়োমেট্রিক করার সময় বলা হয়েছিল, আধার কার্ডের কাজ এগিয়ে রাখা হচ্ছে। আসলে এনআরসি প্রকাশের পর যাঁরা বিদেশি চিহ্নিত হবেন, তাঁরা যাতে পালিয়ে যেতে না পারেন, সে লক্ষ্যেই বাদ পড়া সকলের বায়োমেট্রিক লক করা হয়েছিল। চূড়ান্ত এনআরসিতে যাঁদের নাম উঠে যাবে, তাঁদের আধার কার্ড করে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল কর্তৃপক্ষের। কিন্তু এনআরসি এখনও গৃহীত না হওয়ায় সকলের বায়োমেট্রিক 'লক' হয়ে রয়েছে। তাদের মধ্য থেকে এনআরসিতে নাম ওঠা ও বাদ পড়ায় পার্থক্য করা যাচ্ছে না। তাঁরা এখন আধার কার্ডের জন্য বায়োমেট্রিক করতে গেলেই আটকে যাচ্ছে। আটকে যাচ্ছে সমস্ত সুযোগ-সুবিধে। এখন আবার ব্যাঙ্কের পুরনো অ্যাকাউন্টগুলিও আধার লিঙ্ক না-হলে কাজ করবে না বলে বারবার জানানো হচ্ছে। গরিবদের দুর্ভাবনা, রেশন কার্ড কেড়ে নেওয়া হলে যে দুবেলা খাবারই জুটবে না! যাঁদের নাম ওঠেনি, তাঁদেরও অনেকের হাতে ১৯৭১ সালের আগের নথি। কিন্তু সব জায়গায় বলে, আগে আধার নম্বরটা বলুন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement