Naresh Gujral

‘সিএএ নিয়ে জোটে আলোচনাই হয়নি’, চাপ বাড়াল এনডিএ-র পুরনো শরিক শিরোমণি অকালি দল

সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন এনডিএ শরিক শিরোমণি অকালি দলের (এসএডি) নেতা ও সাংসদ নরেশ গুজরাল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ১২:৫৮
Share:

বিজেপিকে জোট নিয়ে সতর্কবার্তা নরেশ গুজরালের। ছবি: টুইটার

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে দেশ জুড়ে চলা ক্ষোভ-বিক্ষোভের আঁচ এ বার হানা দিল বিজেপি-র নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স বা এনডিএ-এর অন্দরেও। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন এনডিএ শরিক শিরোমণি অকালি দলের (এসএডি) নেতা ও সাংসদ নরেশ গুজরাল। তাঁর দাবি, সিএএ চালু করার মতো এত বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে শরিকদের সঙ্গে কোনও আলোচনাই করেনি বিজেপি। আর তাতে এনডিএ-র বেশির ভাগ শরিকই অসন্তুষ্ট বলেও দাবি তাঁর। এ নিয়ে বিজেপিকে ‘সাবধান’ করে দেওয়ার পাশাপাশি অটলবিহারী বাজপেয়ীর ‘জোট ধর্ম’পালনের কথা স্মরণ করিয়েছেন আর এক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দ্রকুমার গুজরালের পুত্র নরেশ গুজরাল। একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা থাকায় বিজেপি জোট শরিকদের অবজ্ঞা করছে বলেই কার্যত অভিযোগ করেছেন তিনি।

Advertisement

লোকসভা ও রাজ্যসভায় মসৃণ ভাবে পাশ হয়ে গেলেও, দেশজোড়া বিক্ষোভ-প্রতিবাদের মুখে পড়ে সিএএ নিয়ে বিপাকে পড়েছে মোদী সরকার। ওই আইনের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে বিরোধীরাও। কিন্তু, এ বার মোদী সরকারের চাপ বাড়িয়ে দিল এনডিএ শরিক শিরোমণি অকালি দল। সিএএ নিয়ে এনডিএ শরিকদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অকালি দলের নেতা নরেশ বলেন, ‘‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে এনডিএ-তে এ নিয়ে আলোচনা হয়নি। এটা আরও দুর্ভাগ্যজনক যে কারও মতামত পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। এই কারণে এনডিএ শরিকরা খুশি নয়।’’

সাক্ষাৎকার সংক্ষিপ্ত হলেও জোরাল বার্তা দিয়েছেন এসএডি নেতা নরেশ। এই সুযোগে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহকে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর মতো ‘জোট ধর্ম’ পালনের কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন এনডিএ-র অন্যতম পুরনো শরিক এসএডি-র ওই নেতা। তিনি বলেন, ‘‘আমি বিভিন্ন সময়ে, বার বার বলেছি যে, আমাদের বাজপেয়ীর দেখানো পথে চলা উচিত। আপনারা মনে করতে পারবেন বাজপেয়ীজি অন্তত ২০টি দলকে নিয়ে জোট সরকার চালিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও প্রত্যেকে খুশি ছিল, কারণ প্রত্যেককে সম্মান দেওয়া হত। তাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গে সমান ব্যবহার করা হত।’’ বাজপেয়ী জমানাতেও এনডিএ-র শরিক ছিল এসএডি। সে সময়ের কথা তুলে ধরে নরেশ বলেন, ‘‘ওঁর দরজা সব সময় খোলা ছিল। তখন আলোচনা হত।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: বাংলায় ক’টা গুলি চলেছে, বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ মমতার​

এই সূত্রেই প্রয়াত অরুণ জেটলির কথা টেনে নরেশ বলেন, ‘‘তিনি যত দিন জীবিত ছিলেন আমি বলতাম, আলোচনার রাস্তা খোলা রয়েছে। এক জন অন্তত ছিলেন যাঁর কাছে যাওয়া যেত। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে তাঁর মৃত্যুর পর সেই রাস্তাও আরও কাজ করছে না।’’

লোকসভায় এনডিএ-র হাতে রয়েছে ৩৫৩টি আসন। যার মধ্যে একা বিজেপির কাছেই রয়েছে ৩০৩ আসন। লোকসভায় মাত্র দু’জন সাংসদ রয়েছে শিরোমণি অকালি দলের। একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা থাকায় বিজেপি জোট শরিকদের অবজ্ঞা করছে বলেই কার্যত অভিযোগ করেছেন নরেশ। সিএএ নিয়ে বক্তব্যের সূত্র ধরেই এনডিএ-তে থাকা বা না থাকা নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি। নরেশ দাবি করেন, ‘‘সরকার কী অবস্থান নিচ্ছে গোটা বিষয়টি তার উপরেই নির্ভর করবে।’’ এই সূত্রেই এনডিএ-র বাকি শরিকদের কথাও উঠে এসেছে তাঁর সাক্ষাৎকারে, তাঁর দাবি, ‘‘আমি অনেক শরিকের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তারা কেউই সত্যি খুশি নয়। এই বিষয়ে তারা খুশি নয় যে সময়ে সময়ে বৈঠক হচ্ছে না। আমার মনে হয়, কিছু সংশোধন প্রয়োজন।’’

আরও পড়ুন: এনপিআর নিয়ে মমতার সঙ্গে কথা বলতে চান শাহ​

মহারাষ্ট্রে মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে টানাপড়েনের জেরে কয়েক দিন আগেই এনডিএ-র সবচেয়ে পুরোন শরিক শিবসেনাকে হারিয়েছে বিজেপি। মোদী-শাহ-এর ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে কংগ্রেস ও এনসিপি-র হাত ধরে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়েছেন উদ্ধব ঠাকরেরা। এ বার ‘জোট ধর্ম’ পালন নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলে দিল আরেক পুরনো শরিক এসএডি-ও। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী শিবির ও নাগরিক সমাজের প্রতিবাদ কেন্দ্রীয় সরকারের মাথাব্যথা বাড়িয়ে দিয়েছে। আর সেই চাপ আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিল এসএডি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement