নালিশের টুইট। ছবি: টুইটার।
দেখে বোঝার উপায় নেই সংরক্ষিত কামরা। ঠাসাঠাসি ভিড়ে পা রাখার জায়গা নেই। করমণ্ডল এক্সপ্রেসে এটাই ছিল প্রতি দিনের ছবি। তা নিয়ে টুইটারে চলন্ত ট্রেন থেকেই রেলকে অভিযোগ জানিয়েছিলেন যাত্রীরা। দুর্ঘটনার পরে সম্প্রতি সেই সব অভিযোগ ছড়িয়ে পড়েছে টুইটারে। প্রশ্ন উঠেছে, বার বার অভিযোগ পেয়েও যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপত্তা নিয়ে রেলের বিন্দুমাত্র নজর ছিল কি?
গত ১৫ মে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের যাত্রী বিক্রমকিশোর বেহেরা টুইট করে অভিযোগ জানিয়েছিলেন রেল মন্ত্রক ও রেলমন্ত্রীর কাছে। তিনি নিজের সংরক্ষিত কামরার একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে অভিযোগ করেন, অসংরক্ষিত কামরার যাত্রীদের ভিড়ে তাঁদের কামরা ভরে গিয়েছে। রেলের তরফে জবাবি টুইটে তাঁকে পিএনআর নম্বর ও মোবাইল নম্বর মেসেজ করতেও বলা হয়েছিল। ২৪ মে সোমদত্তা চক্রবর্তীও চেন্নাইগামী করমণ্ডল একপ্রেসের একই ধরনের ভিডিয়ো পোস্ট করে অভিযোগ করেন। সোমদত্তা টুইটে ক্ষোভ জানিয়ে লেখেন, ‘‘যাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে পরিকল্পনা করে টিকিট কেটেছেন, তাঁরা অপরাধ করে ফেলেছেন!’’ টুইটারে রেল মন্ত্রকের অ্যাকাউন্টে গেলে এমন অসংখ্য অভিযোগচোখে পড়ছে।
দুর্ঘটনায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের একাধিক সংরক্ষিত কামরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যে হেতু সংরক্ষণের তোয়াক্কা না করে ওই কামরাগুলি অসংরক্ষিত টিকিটের যাত্রীদের ভিড়ে প্রায়ই ভরে থাকে, তাই মৃতের সংখ্যাও প্রচুর বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সমরেন্দ্র বিশাল নামে এক যাত্রী নিজের সংরক্ষিত কামরার ভিড়ে ঠাসা ছবি পোস্ট করে রেলকে অভিযোগ জানান। তিনি লেখেন, ‘‘এই হচ্ছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের অবস্থা। আমি টিকিট পরীক্ষককে বলায় উনি বললেন অনলাইনে অভিযোগ জানাতে।’’ রেল মন্ত্রক ও রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে ট্যাগ করে তিনি লেখেন, ‘‘যদি সাধারণ কামরার মতোই যেতে হবে, তা হলে সংরক্ষণ করব কেন? শৌচাগারের অবস্থা ভয়ঙ্কর।’’ রুটিনমাফিক যান্ত্রিক জবাবে রেলের তরফে পিএনআর নম্বর ও মোবাইল নম্বর দিতে ও ইন্টারনেটে বা ১৩৯ নম্বরের হেল্পলাইনে যোগাযোগ করতে বলা হয়। সংরক্ষিত কামরায় ভিড়ের চাপে পরিস্থিতি এতই ভয়ঙ্কর ছিল, ছবি দিয়ে টুইট করে রেলপুলিশের সাহায্য চেয়েছিলেন চেন্নাইগামী করমণ্ডলের এক যাত্রী। ১২ মে শ্রীনিবাস পট্টনায়ক নামে ওই যাত্রী টুইট করেন, ‘‘ব্রহ্মপুরে এস৫ কামরার এই অবস্থা। শিশু ও মহিলারা পিষে যাচ্ছেন। দয়া করে রেলপুলিশের মাধ্যমে সাহায্য করতে পারেন?’’
চেন্নাই থেকে ফিরতি করমণ্ডল এক্সপ্রেসেও একই পরিস্থিতি থাকে। ডিসেম্বরের ৩ তারিখ তা নিয়ে টুইট করেন ক্যামেলিয়া রায়চৌধুরী নামে এক যাত্রী। হৃদ্রোগে আক্রান্ত এক জনকে নিয়ে ফিরছিলেন তিনি। কামরার ছবি দিয়ে ক্যামেলিয়া লেখেন, ‘‘হাওয়া চলাচলের জায়গা নেই। আমার সঙ্গে একজন রোগী রয়েছেন, যাঁর ১৫ দিন আগে সেরিব্রাল স্ট্রোক হয়েছে। লজ্জা!’’