Bulandshahr

বুলন্দশহরকাণ্ডে পুলিশ খুনে অভিযুক্তদের অভ্যর্থনায় জয় শ্রী রাম ধ্বনি! দায় নিল না সরকার

সাম্প্রদায়িক হিংসায় উস্কানি এবং কর্তব্যরত এক পুলিশ অফিসারকে খুনের অভিযোগে গত বছর ডিসেম্বরে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৯ ১৬:৩৬
Share:

সুবোধকুমার সিংহকে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। —ফাইল চিত্র।

বুলন্দশহর কাণ্ডে অভিযুক্তদের রাজকীয় অভ্যর্থনা জানানো হল উত্তরপ্রদেশে। গোছা গোছা মালা পরিয়ে জেলের বাইরে স্বাগত জানানো হল তাদের। সম্মান জানাতে দেদার জয় শ্রী রাম এবং বন্দে মাতরম ধ্বনিও উঠল সেখানে। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে ইতিমধ্যেই সেই দৃশ্য ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। এতে নতুন করে সমালোচনার মুখে পড়েছে যোগী আদিত্যনাথ সরকার। তবে গোটা ঘটনার দায় ঝেড়ে ফেলেছে তারা। তাদের দাবি, এটা সামান্য একটা ঘটনা। তা নিয়ে খামোকা তিল থেকে তাল করছে বিরোধীরা।

Advertisement

সাম্প্রদায়িক হিংসায় উস্কানি এবং কর্তব্যরত এক পুলিশ অফিসারকে খুনের অভিযোগে গত বছর ডিসেম্বরে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ, যাদের মধ্যে অন্যতম ছিল বিজেপির যুব সংগঠন ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার (বিজেওয়াইএম) প্রধান শিখর আগরওয়াল। গ্রেফতার করা হয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের স্থানীয় নেতা উপেন্দ্র রাঘবকেও। এ ছাড়াও হেমু, জিতু ফৌজি, সৌরভ এবং রোহিত রাঘব-সহ আরও কয়েক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

শনিবার ইলাহাবাদ আদালত ওই ছ’জনের জামিন মঞ্জুর করে। তার পরই বুলন্দশহর জেলা সংশোধনাগারের বাইরে ভিড় জমায় অভিযুক্তদের সমর্থকরা। জেলের বাইরে পা রাখতেই তাদের নিয়ে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। গলায় মালা পরিয়ে স্বাগত জানানো হয় প্রথমে। তার পর শুরু হয় অভিযুক্তদের ঘিরে ধরে জয় শ্রীরাম, বন্দে মাতরম এবং ভারত মাতা কি জয় স্লোগান। এমনকি, অভিযুক্তদের জামিন পাওয়ার খুশিতে বিশেষ ‘পার্টি’র আয়োজন হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ভারতে জেএমবি জঙ্গি গোষ্ঠীর মাথা বীরভূমের ইজাজ এসটিএফের জালে​

পুলিশ ও প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন ঘটনা ঘটল কী ভাবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তবে এতে তাদের কোনও হাত নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজ্যের উপ মুখ্যমন্ত্রী কেপি মৌর্য বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের সমর্থকরা যদি তাদের সমর্থন জানাতে যায়, সেখানে সরকার এবং বিজেপির কিছু করার নেই। এটা সামান্য ঘটনা। খামোকা তিল থেকে তাল করছে বিরোধীরা।’’

উত্তরপ্রদেশ সরকার দায় ঝেড়ে ফেললেও, গোটা ঘটনার জন্য তাদেরই দায়ী করেছেন সুবোধকুমার সিংহের স্ত্রী। অভিযুক্তরা জামিন পেল কীভাবে, সে নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘আদালতের সিদ্ধান্তে আমি হতাশ। কিসের ভিত্তিতে ওদের জামিন দেওয়া হল? মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, অবিলম্বে জামিন বাতিল করা হোক।’’

আরও পড়ুন: ফের ধাক্কা চিদম্বরমের, জামিন নিয়ে হস্তক্ষেপে রাজি নয় সুপ্রিম কোর্ট​

গো-হত্যার গুজবকে ঘিরে গত বছর ২ ডিসেম্বর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে বুলন্দশহরে। তাতে স্থানীয় সুমিত নামের এক স্থানীয় যুবকের মৃত্যু হয়। পরস্থিতি সামলাতে গিয়ে খুন হন সিয়ানা থানার ইন্সপেক্টর সুবোধকুমার সিংহ। ৪০০ জনের একটি ভিড় তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। পরে গাড়ির মধ্য থেকে তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানায়, কুড়ুল চালিয়ে তাঁর হাতে দু’টি আঙুল কেটে নিয়েছিল হামলাকারীরা। আঘাত করা হয় মাথাতেও। সেই অবস্থাতেই গাড়ি চালিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন সুবোধ। তখনই গুলি করে খুন করা হয় তাঁকে।

সেই ঘটনায় তিন হাজার ৪০০ পাতার কেস ডায়েরি জমা দেয় বিশেষ তদন্তকারী সংস্থা সিট। হিংসায় উস্কানি দেওয়ার জন্য ৩৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা পড়ে। মূল অভিযুক্ত হিসাবে নাম উঠে আসে বজরঙ্গ দলের স্থানীয় নেতা যোগেশ রাজের। তার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহ এবং অন্যান্য ধারায় মামলা দায়ের হয়। এখনও জেলবন্দি সে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement