শুক্রবার রাতে উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসিতে মহারানি লক্ষ্মীবাঈ মেডিক্যাল কলেজে আগুন লাগে। ছবি: পিটিআই।
ঝাঁসির মহারানি লক্ষ্মীবাঈ মেডিক্যাল কলেজে শুক্রবারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের সরকার। ঝাঁসির ডিভিশনাল কমিশনার এবং ডিআইজিকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। ঝাঁসির সরকারি হাসপাতালে শুক্রবারের ওই অগ্নিকাণ্ডে ১০ সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়েছে। আহত অবস্থায় ১৬ জন শিশুকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মৃতদের মধ্যে সকলের দেহও শনাক্ত করা যাচ্ছে না। শনিবার সকালে হাসপাতালে পৌঁছে যান উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক। তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত সাত সদ্যোজাতের দেহ চিহ্নিত করা হয়েছে। বাকি তিন শিশুর দেহ শনাক্ত করতে প্রয়োজনে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন উপমুখ্যমন্ত্রী।
শুক্রবার রাতে আগুন লেগেছিল ঝাঁসির ওই হাসপাতালের সদ্যোজাত (নিকু) বিভাগে। ওই ওয়ার্ডে ১৮টি শয্যা রয়েছে। কিন্তু দুর্ঘটনার সময়ে নিকু ওয়ার্ডে আরও বেশি সংখ্যক সদ্যোজাতকে রাখা হয়েছিল। কানপুরের এডিজি অলোক সিংহ জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময় ওই ওয়ার্ডে ৪৭ সদ্যোজাত ছিল। এখনও পর্যন্ত ১০ সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়েছে। ১৬ শিশু বর্তমানে ভর্তি রয়েছে বিভিন্ন হাসপাতালে। কয়েক জনকে ভর্তি করানো হয়েছে বেসরকারি হাসপাতালেও। বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি সদ্যোজাতদের চিকিৎসার খরচ সরকার বহন করবে বলে জানিয়েছেন উপমুখ্যমন্ত্রী। দুর্ঘটনায় মৃত শিশুদের পরিবার পিছু ১০ লাখ টাকা আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। আহতদের পরিবারের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মৃতদের পরিবার পিছু ২ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করেছেন।
কী কারণে দুর্ঘটনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে শর্ট সার্কিটের কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে। সদ্যোজাতদের রাখার জন্য নিকু ওয়ার্ডে বিশেষ ব্যবস্থা থাকে। এই ওয়ার্ডগুলিতে সাধারণত বেশি মাত্রায় অক্সিজেন রাখা হয়। ফলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল বলে অনুমান। প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অগ্নিকাণ্ডে ১০ সদ্যোজাতের মৃত্যুতে উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। হৃদয়-বিদারক এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ পরিবারগুলির পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার রাত প্রায় পৌনে ১১টা নাগাদ আগুন লেগেছিল হাসপাতালে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হাসপাতালের নিকু ওয়ার্ড হঠাৎ ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছিল। দমকল পৌঁছনোর আগেই শিশু বিভাগের জানলা ভেঙে ৩৭ জন শিশুকে উদ্ধার করে বাইরে বার করা হয়েছিল। ঝাঁসির জেলাশাসক অবিনাশ কুমার জানিয়েছেন, ঠিক কী কারণে আগুন লেগেছে, তা তদন্ত করে দেখার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।