সিরিয়াল কিলার চার্লস শোভরাজ। ফাইল চিত্র।
ভারতের তিহাড় জেলে বসবাস ও তার মামলাকে রীতিমতো নাটক করে তুলেছিল সিরিয়াল কিলার চার্লস শোভরাজ। নেপালের জেলে থাকার সময়েই এক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শোভরাজ জানিয়েছে, সে ভারতে ফের আসতে চায়।
এশিয়ায় অন্তত ২০ জন বিদেশি পর্যটককে খুনে অভিযুক্ত শোভরাজ গত কাল নেপালের জেল থেকে মুক্তি পেয়েছে। সে দেশের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, তাকে ফ্রান্সে ফেরত পাঠিয়েছে নেপাল। তবে নেপালের জেলে থাকাকালীনই ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শোভরাজ দাবি করেছিল, সে নেপালে কোনও অপরাধই করেনি। তার দাবি, ভারতের জেল থেকে তার মুক্তির সময়ে দিল্লির তরফে নেপালের কাছে জানতে চাওয়া হয় সে দেশের পুলিশ শোভরাজকে খুঁজছে কি না। নেপাল তখন জানায়, সে দেশে শোভরাজের বিরুদ্ধে কোনও মামলা নেই।
শোভরাজের দাবি, সে জন্যই ২০০৩ সালে হংকংয়ের এক চিনা সংস্থার হয়ে নেপালে বৈঠক করতে এসেছিল সে। সেই বাণিজ্য চুক্তির সঙ্গে পাকিস্তানও জড়িত ছিল। কাঠমান্ডুতে কয়েক দিন থেকে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার। কিন্তু তার নেপালে আসার খবর প্রকাশিত হওয়ার পরেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। শোভরাজের দাবি, তখন মাওবাদী সন্ত্রাস চলার ফলে পুলিশ ও আদালত কোনও আইনকে সম্মান করত না।
ভারতের জেলে ঘুষ দিয়ে শোভরাজ বিলাসবহুল জীবনযাপন করত বলে দাবি করেছেন তৎকালীন অনেক পুলিশ কর্তাই। কিন্তু নেপালের জেলে পরিস্থিতি এখনও ভয়ানক বলেই জানিয়েছে সে। তার দাবি, অনেক বন্দিকেই খোলা আকাশের নীচে শুতে হয়। খাদ্যের অভাবে অনেকের মৃত্যু হয়। শোভরাজের দাবি, তার আবেদনের ফলেই জেলে বন্দিদের খাবারের পরিমাণ বেড়েছিল।
শোভরাজের দাবি, ১৯৯৯ সালের শেষ দিকে নেপাল থেকে ভারতীয় বিমান ছিনতাইয়ের পরে প্যারিসে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন তৎকালীন ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী যশবন্ত সিংহের এক দূত। পরে যশবন্ত সিংহের সঙ্গে অনেক বার কথা হয় তার। ওই ঘটনার জেরে বর্তমানে জইশ ই মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজ়হারকে মুক্তি দিয়েছিল ভারত। শোভরাজের দাবি, মাসুদের তৎকালীন দল হরকত উল আনসারের কাছ থেকে ভারতীয় বিমানের যাত্রীদের সুরক্ষা সম্পর্কে ‘মুচলেকা’ আদায় করেছিল সে। ভারতীয় যাত্রীদের মুক্তি সম্পর্কে সে যশবন্তকে অনেক ‘পরামর্শ’ও দিয়েছিল বলে দাবি শোভরাজের। এ জন্য সে অনেক বার পাকিস্তানে গিয়েছিল।
শোভরাজ জানিয়েছে, সে ভারতে আসতে চায়। পুণেতে তার তিন বান্ধবী রয়েছেন যাঁদের সে বোন বলেই মনে করে। তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে চায় সে।