সচিন মীনা এবং সীমা হায়দার। —ফাইল চিত্র ।
ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব আগেই এসেছিল। এ বার পেলেন চাকরির প্রস্তাবও। কথা হচ্ছে ভারতীয় প্রেমিকের টানে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করা ‘পাক বধূ’ সীমা হায়দরের। গুজরাতের এক ব্যবসায়ী সীমাকে এই চাকরির প্রস্তাব দিয়েছেন। চাকরির প্রস্তাব এসেছে প্রেমিক সচিন মীণার কাছেও। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সীমা এবং সচিন যদি ওই চাকরিতে যোগ দেন, তা হলে তাঁদের এক এক জনের মাসিক বেতন হবে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার মধ্যে।
বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার সন্ধ্যায় নয়ডার রবুপুরা গ্রামে সচিনের বাড়িতে একটি চিঠি পৌঁছয়। হুমকি চিঠি হতে পারে মনে করে প্রথমে খানিকটা ভয়ই পেয়েছিলেন মীণা পরিবারের সদস্যরা। চিঠির খাম না খুলে পুলিশে খবর দেন সচিনের বাবা নেত্রপাল। পুলিশ এসে চিঠির খাম ভাল ভাবে পরীক্ষা করার পর সেটি খোলা হয়। খাম খুলে দেখা যায়, সীমা এবং সচিনকে সেই চিঠি পাঠিয়েছেন গুজরাতের এক ব্যবসায়ী। চিঠিতে ব্যবসায়ী সীমা এবং সচিনকে ৫০-৬০ হাজার টাকা বেতনে চাকরির প্রস্তাব দিয়েছেন বলেও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে। চিঠিতে নাকি এ-ও লেখা ছিল যে, সীমা এবং সচিন নিজেদের সুবিধামতো চাকরিতে এসে যোগ দিতে পারেন। এ ছাড়াও তাঁদের অন্য কোনও সাহায্য লাগলে, তা-ও করার আশ্বাস নাকি দিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী।
প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশে পুলিশের নির্দেশে বর্তমানে সচিন-সীমারা ঘরবন্দি। সচিনের বাবা নেত্রপাল কয়েক দিন আগে দাবি করেছিলেন, প্রতি দিন সংবাদমাধ্যমের ভিড়ে বাড়ি থেকে বেরোনোই মুশকিল হয়ে পড়েছে তাঁদের। তিনি এ-ও জানিয়েছিলেন, তাঁরা দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ। কিন্তু আইনি প্রক্রিয়া চলার কারণে বাড়ি থেকে বেরোতে পারছেন না। ঘরে বন্দি থাকার কারণে কাজের অভাবে বাড়িতে খাবারের আকাল দেখা দিয়েছে। সচিনের বাবা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন, এই পরিস্থিতি থেকে দ্রুত মুক্তি চান তাঁরা। সরকার যেন কিছু না কিছু সমাধান দ্রুত বার করে। নেত্রপালের সেই আর্জি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় তাঁদের সাহায্যের জন্য একে একে অনেকেই এগিয়ে আসতে শুরু করেছেন। সবার প্রথম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন অমিত জানি নামে মিরাটের এক ছবি প্রযোজক। তিনি সীমাকে ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাবও দেন। শুধু তাই-ই নয়, আর্থিক সহযোগিতা করার আশ্বাসও দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, অনলাইন গেম পাবজি খেলার সময় ২০১৯ সালে সচিনের সঙ্গে পরিচয় হয় সীমার। সেখান থেকে প্রেম। ২২ বছরের যুবকের প্রেমে পড়ে প্রায় ১,৩০০ কিলোমিটার দূর থেকে ছুটে আসেন ৩০ বছরের সীমা। শুধু একা নন। সঙ্গে ছিল তাঁর চার সন্তান, যাদের সবার বয়সই সাত বছরের কম। ভিসা ছাড়া নেপালের মাধ্যমে বেআইনি ভাবে ভারতে প্রবেশ করার অভিযোগে ৪ জুলাই গ্রেফতার হন সীমা। তাঁকে আশ্রয় দিয়ে গ্রেফতার হন সচিন এবং তাঁর বাবা নেত্রপাল। পরে জামিনে ছাড়াও পান তাঁরা। সীমার ভারতে অনুপ্রবেশ দিয়ে ক্রমশ ঘনীভূত হয়েছে রহস্য। জট ছাড়াতে তদন্তে নেমেছে উত্তরপ্রদেশ এটিএস এবং ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। সীমা আসলে কে? ভারতীয় প্রেমিকের টানে সীমান্ত পার করে আসা সাধারণ পাক বধূ, না পাকিস্তানি গুপ্তচর, তা-ই এখন খুঁজে বার করতে তৎপর হয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।