চলতি বছরে দিল্লির সিঙ্ঘু সীমানায় কৃষকদের আন্দোলন। পুলিশ সিঙ্ঘু সীমানা বন্ধ করে দিলে সেখানেই অবস্থানে বসে পড়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। —ফাইল চিত্র।
সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের মাঝে কৃষক আন্দোলন ঘিরে ফের উত্তাপ বাড়ছে রাজধানী দিল্লিতে। পাঁচ দফা দাবিকে সামনে রেখে সোমবার সংসদ ভবন অভিযানের ডাক দিয়েছে ভারতীয় কিষাণ পরিষদ (বিকেপি)। লক্ষ্য, নতুন তিন কৃষি আইনের আওতায় কৃষকদের ক্ষতিপূরণ এবং সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত দাবিদাওয়াকে তুলে ধরা। দুপুর ১২টায় নয়ডার মহামায়া উড়ালপুল থেকে মিছিল শুরু হওয়ার কথা। হেঁটে এবং ট্রাক্টরে চেপে আন্দোলনকারী কৃষকেরা এগিয়ে যাবেন দিল্লির সংসদ ভবনের উদ্দেশে। রবিবার বিকেপি নেতা সুখবীর খলিফা এই কর্মসূচির ঘোষণা করেছেন। গৌতম বুদ্ধ নগর, বুলন্দশহর, আলিগড়, আগরা-সহ ২০টি জেলার কৃষকেরা এই বিক্ষোভ মিছিল সামিল হবেন বলে দাবি সংগঠনের।
কৃষকদের মিছিল ঘিরে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সকাল থেকে তৎপর পুলিশ প্রশাসন। নয়ডা-দিল্লি সীমানায় বসানো হয়েছে ব্যারিকেড। চলছে পুলিশের চেকিং। দিল্লির পুলিশ কমিশনার (আইনশৃঙ্খলা) শিবহরি মীনা জানিয়েছেন, মহামায়া উড়ালপুল, চিল্লা এবং দিল্লি-নয়ডা সরাসরি সংযোগকারী রাস্তায় প্রচুর পরিমাণে পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হচ্ছে। নয়ডা-গ্রেটার নয়ডা এক্সপ্রেসওয়েতেও প্রচুর চেক পয়েন্ট বসানো হয়েছে। দিল্লি-নয়ডা সংযোগকারী বেশ কিছু রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। পণ্যবাহী গাড়িগুলিকে অন্য পথ দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, চিল্লা এবং দিল্লি-নয়ডা সরাসরি সংযোগকারী আট লেনের রাস্তায় যানজট তৈরি হয়েছে।
সোমবারের মিছিলের মাধ্যমে পাঁচ দফা দাবি সংসদ ভবন পর্যন্ত পৌঁছে দিতে চাইছে বিকেএস। তার মধ্যে অন্যতম, জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত ক্ষেত্রে কৃষকদের দাবি। পুরনো অধিগ্রহণ আইন অনুসারে, ১০ শতাংশ জমি এবং ৬৪.৭ শতাংশ বর্ধিত হারে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারির পরে কোনও জমি অধিগ্রহণ হলে, ২০ শতাংশ জমি এবং বাজার দরের চার গুণ বেশি ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ভূমিহীন কৃষকদের সন্তানের জন্য পুনর্বাসন এবং চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে।
এ ছাড়া উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির (হাই পাওয়ার্ড কমিটি) সুপারিশগুলি নিয়ে সরকারি নির্দেশিকা জারি করতে হবে। ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য সংক্রান্ত বিষয়ে কৃষক অভিযোগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করে দেয়। সেই কমিটির প্রস্তাবগুলির বিষয়ে এ বার সরকারি নির্দেশিকা চাইছে বিকেপি। পাশাপাশি বসত এলাকার বিষয়েও গ্রহণযোগ্য নিষ্পত্তি চাইছেন আন্দোলনকারী কৃষকেরা।