কোভিড পরীক্ষার জন্য লাইন দিয়েছেন যাত্রীরা। রবিবার উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুর স্টেশনে। ছবি: পিটিআই।
যথাযথ সুরক্ষাবিধি না মানলে প্রথম দফার মতোই কোভিডের দ্বিতীয় দফার সংক্রমণও ভয়ঙ্কর আকার নিতে পারে বলে সাবধান করলেন এমসের প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া। ইতিমধ্যেই, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় ধরাশায়ী দেশের বেশ কিছু রাজ্য। এই অবস্থায় এক সাক্ষাৎকারে এমস-প্রধান বলেছেন, ‘‘কোভিড-বিধি মানতে মানুষের অনীহা দেখা যাচ্ছে। মানুষ ভাবতে শুরু করেছে প্রতিষেধক এসে গিয়েছে মানেই করোনা চলে গিয়েছে। তাই কেউ মাস্ক পরছেন না। আমরা দেখছি, বড় বড় জনসমাগমে মাস্ক না পরেই সকলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এই সব অনুষ্ঠানগুলি থেকেই ব্যাপকভাবে করোনা ছড়াচ্ছে।’’ তিনি এ-ও মনে করছেন, ছয় মাসে আগে যত গুরুত্ব গিয়ে বা যে হারে কোভিড পরীক্ষা, শনাক্তকরণ ও রোগীর নিভৃতবাসের নিয়ম মানা হচ্ছিল, এখন তা অনেকটাই শিথিল হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি, ভাইরাসের মিউটেশনের ফলে যে নতুন প্রকার সৃষ্টি হচ্ছে তা আরও বেশি সংক্রমক।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ৪৩ হাজার ৮৪৬ জন করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে এই বছরে যা সর্বাধিক। ১১ দিন ধরে একটানা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে মোট অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লক্ষ ৯ হাজার ৮৭। মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব, কেরল, কর্নাটক, গুজরাত এই পাঁচ রাজ্যে পরিস্থিতি শোচনীয়। স্কুল, কলেজ, দোকান, জমায়েত বন্ধ করেও নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না সংক্রমণ। বেশ কিছু জেলায় শুরু হয়েছে লকডাউন, রাত্রিকালীন কার্ফুও।
কর্নাটকেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে সুধাকর। তিনি বলেছেন, ‘‘পরিস্থিতি ফেরাতে প্রত্যেকের সহযোগিতা প্রয়োজন। পরবর্তী তিন মাস আমাদের জন্য খুবই কঠিন।’’ এই অবস্থায় কী ভাবে এগোতে হবে তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস সংক্রান্ত প্রযুক্তিগত উপদেষ্টা কমিটি সরকারকে স্পষ্ট বলে দিয়েছে, সরকার ও সাধারণ মানুষ বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তায় সাড়া না দিলে পরবর্তী ফলের জন্য প্রত্যেকে দায়ী থাকবে।’’
এ দিকে, কোভিডের দু’টি ডোজ়ই দেওয়া থাকলে ব্রিটেন, ইউরোপ, দক্ষিণ এশিয়া ও ব্রাজিলের যাত্রীরা মুম্বইয়ে এলে এক সপ্তাহের জন্য নিভৃতবাসে থাকতে হবে না। বৃহন্মুম্বই পুরসভা এ-ও জানিয়েছে, ৬৫ বছর বয়সের বেশি বয়সি যাত্রীদের, গর্ভাবস্থার চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকা মহিলা, ক্যানসার, শারীরিক অক্ষমতা, মানসিক অসুস্থতা ও সেরিব্রাল পলসির মতো সমস্যা থাকলে তাঁদেরও নিভৃতবাসে থাকতে হবে না।