ফাইল ছবি
সংক্রমণ সামান্য কমেছে মানেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শেষ হয়ে গিয়েছে, এমনটা নয়। প্রশাসনের চিন্তা বাড়াচ্ছে করোনা সংক্রমণের ‘আর ফ্যাক্টর’ এবং ভাইরাসের ডেল্টা রূপ। শেষ কয়েকদিনে দেশের ১৮টি জেলায় সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি মঙ্গলবার, ‘আর ফ্যাক্টর’-এর উল্লেখ করে দেশের আটটি রাজ্যের সংক্রমণ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। যদিও সেই এই আট রাজ্যের তালিকায় নেই পশ্চিমবঙ্গ।
এক জন করোনা আক্রান্তের শরীর থেকে অন্য যত জনের শরীরে করোনা ছড়ায়, তাকে বলা হয় ‘রিপ্রোডাকশন নম্বর’ বা আরটি। এটিকেই ‘আর ফ্যাক্টর’-ও বলা হচ্ছে। এই বিষয় নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল বলেছেন, ‘‘আরটি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বেড়ে চলেছে। ভারতের ক্ষেত্রে সেটি ১.২। আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতে সংক্রমণের পরিস্থিতি এখনও একই রকম রয়েছে।’’ এই পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করেই কেন্দ্রের কোভিড টাস্ক ফোর্সের প্রধান ভিকে পাল বলেছেন, ‘‘সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে তখনই বলা যাবে, যখন দেখা যাবে এই আর ফ্যাক্টর ০.৬-এ এসে পৌঁছেছে। কিন্তু পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, তা এখনও ১-এর উপরে রয়েছে, যা চিন্তার।’’ সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে মহারাষ্ট্র, কেরল, তামিলনাড়ু ও উত্তর পূর্বের বেশ কয়েকটি রাজ্যে।
দেশে এখনও ৪৪ জেলায় সংক্রমণের হার রয়েছে ১০ শতাংশের উপরে। এই জেলাগুলিতে করোনার ডেল্টা রূপের সংক্রমণ বেশি নজরে পড়ছে। সাংবাদিক বৈঠকে একথা জানালেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব অগরওয়াল। তিনি মনে করিয়ে দিলেন, এখনই স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে ঢিলেমি দেওয়ার সময় আসেনি। অতিমারির দাপট শেষ হতে এখনও দেরি আছে।
নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে লব বলেন, ‘‘সারা পৃথিবীতেই ফের করোনার সংক্রমণ রোজই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ঘটনা স্পষ্ট করে যে পৃথিবীতে অতিমারির দাপট এখনই কমছে না। ভারতের দিক থেকে দেখলে, এখনও দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শেষ হয়নি।’’ তিনি কথা বলেছেন সংক্রমণের একটি পরিসংখ্যান নিয়েও।
ভারতের রাজ্যভিত্তিক চিত্রের কথা তুলে ধরতে গিয়ে উঠে এসেছে কেরলের প্রসঙ্গ। পরিসংখ্যানের দিক থেকে স্পষ্ট, দেশের মোট করোনা সংক্রমণের ৪৯ শতাংশের বেশি কেরলের বাসিন্দা। পাশাপাশি তিনি দেশের ৪৪টি জেলার কথা উল্লেখ করেছেন, যেগুলিতে সংক্রমণের হার রয়েছে ১০ শতাংশের উপরে। এর মধ্যে রয়েছে কেরলের ১০টি জেলা, মহারাষ্ট্রের তিনটি, মণিপুরের দু’টি, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, মিজোরামের একটি করে জেলা রয়েছে। দেশের মোট আক্রান্তের ৪৭ শতাংশই এই ৪৪টি জেলার বাসিন্দা। এ ছাড়াও এমন ১৮টি জেলা দেশে রয়েছে, যেখানে আগে সংক্রমণ নেমে গিয়েছিল দুই শতাংশের নীচে। কিন্তু শেষ চার সপ্তাহ ধরে ক্রমে সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার দুই শতাংশের উপরে উঠে গিয়েছে।