অযোধ্যার রামলালার বিগ্রহ। —ফাইল চিত্র।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে উত্তর ভারতে ভাল ফল করার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর দল। তবে এ ক্ষেত্রে কাঁটা দক্ষিণ ভারত। বিধানসভার নিরিখে যেখানে একটি রাজ্যেও ক্ষমতায় নেই বিজেপি। সেই কারণে ‘চারশো পার’ করার গেরুয়া স্লোগানকে বাস্তবায়িত করতে দক্ষিণ ভারতকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার পথে হাঁটছেন মোদী। রামলালার ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠার’ সকালে তা আরও বেশি করে সামনে চলে এল। মূর্তির গড়ন, মন্দিরের ঘরানা, তিলকের ধাঁচ, দক্ষিণী কারিগর— সব মিলিয়েই তা স্পষ্ট। দক্ষিণের একাধিক চিত্রতারকাও আজ উপস্থিত ছিলেন মন্দির প্রাঙ্গনে।
পাঁচ বছরের রামলালাকে ভাস্কর্যে ফুটিয়ে তুলেছেন কর্নাটকের ভাস্কর অরুণ যোগীরাজ। মূর্তির মাথায় যে রুপোলি এবং লাল তিলক পরানো হয়েছে, তা একেবারেই তামিল ঘরানার। যে কালো পাথর দিয়ে রামলালার মূর্তি গড়া হয়েছে, তা এসেছে কর্নাটকেরই এক দলিত কৃষকের কাছ থেকে। মাইসুরুর গুজ্জেগোজানাপুরা গ্রামের ৭০ বছর বয়সি এইচ রামদাস জানিয়েছেন এটা তাঁর ‘সৌভাগ্য’। বলেছেন, “আমার সওয়া দু’একর জমি রয়েছে। সেই জমিতে চাষের জন্য পাথর সরানোর ব্যবস্থা করতে হয়েছিল। স্থানীয় কন্ট্রাক্টরকে আমরা বলেছিলাম পাথরগুলি সরিয়ে দিতে। যোগীরাজ তখনই তার মধ্যে থেকে একটি পাথর বেছে নেন অযোধ্যায় রামলালার মূর্তি বানানোর জন্য।”
আজ অযোধ্যায় আমন্ত্রিত হয়ে এসেছিলেন দক্ষিণের একাধিক চিত্রতারকা। ছিলেন রজনীকান্ত, চিরঞ্জীবী, ধনুষ, রাম চরণের মতো তারকারা। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোড়ন হয় সাদা কুর্তা পাজামা এবং গায়ে বিশাল চাদর জড়ানো রজনীকান্তকে দেখে। তিনি প্রার্থনাও করেন এক মনে। চিরঞ্জীবী এসেছিলেন সস্ত্রীক।
প্রসঙ্গত, রামালালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার আগের দিনই তামিলনাড়ু গিয়েছিলেন মোদী। ধনুষ্কোডির আরিচল মুনাই পয়েন্টে সমুদ্রের পারে বসে প্রাণায়াম করেন প্রধানমন্ত্রী। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দাক্ষিণাত্যে তাঁর রাজনৈতিক সক্রিয়তা এবং একের পর এক সরকারি প্রকল্পের শিলান্যাস, রোড শো ও প্রতিশ্রুতির বাড়বাড়ন্ত লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত কাল তাঁর দক্ষিণাত্য সফর ছিল শুধুমাত্র রামের অনুসরণে। রামায়ণে কথিত, লঙ্কায় যাওয়ার আগে এই ধনুষ্কোডিতেই পুজো করেছিলেন রাম। এখান থেকেই বাঁধা হয়েছিল লঙ্কায় যাওয়ার রামসেতু। সেই স্থান মাহাত্ম্যকে মর্যাদা দিতে সেখানে পুজো দেন মোদী।