নিপার পর এ বার স্ক্রাব টাইফাস আতঙ্ক ছড়াচ্ছে দেশে। এই পোকার কারণেই ছড়ায় সংক্রমণ (বাঁ দিকে)। —ফাইল চিত্র।
ওড়িশায় স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়ে অন্তত পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। অন্য দিকে, হিমাচল প্রদেশের শিমলায় স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়ে ন’জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ও়ড়িশার বরগড় জেলার মুখ্য মেডিক্যাল এবং জনস্বাস্থ্য আধিকারিক সাধুচরণ দাস জানিয়েছেন, সম্প্রতি জেলায় যে পাঁচ জন মারা গিয়েছেন, তাঁরা স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়েই মারা গিয়েছেন। মৃত পাঁচ জন জেলার সোহেলা, আটাবিরা, ভেদেন এবং বরপালি ব্লকের বাসিন্দা বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
হিমাচল প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে, রাজ্যের প্রায় ২৯৫ জন বাসিন্দা স্ক্রাব টাইফাসের উপসর্গ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৯ জন স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত বলে প্রমাণ মিলেছে।
স্ক্রাব টাইফাস শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ টাইফাস থেকে যার অর্থ হল ধোঁয়াটে বা অস্পষ্ট। এঁটুলি পোকার মতো দেখতে ট্রম্বিকিউলিড মাইটস বা টিক-এর মতো পরজীবী পোকার কামড় থেকে এই রোগের জীবাণু মানবদেহে ছড়ায়। এই পোকাগুলির আকার ০.২ মিলিমিটার থেকে ০.৪ মিলিমিটার পর্যন্ত হয়। সাধারণত গ্রামের কৃষিজমিতে এই ধরনের পোকা দেখা যায়। যদিও শহুরে এলাকায় বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্টে ছোট ঝোপঝাড়, গাছপালা কিংবা পোষ্যের গায়ে এই ধরনের পোকার দেখা হামেশাই মেলে। সাধারণত বর্ষায় এই রোগের প্রকোপ বাড়ে। প্রাথমিক ভাবে, এই পোকা কামড়ালে সঙ্গে সঙ্গে কোনও ব্যথা অনুভব হয় না। তবে পরে তা শরীরের ভিতরে গিয়ে সমস্যার সৃষ্টি করে।
বেশ কিছু ক্ষেত্রে রোগীর শরীরে পোকা কামড়ানোর দাগ পাওয়া যায়। দাগটা খানিকটা সিগারেটের ছ্যাকার মতো হয়। এগুলিকে বলে এসকার। যা দেখেই সাধারণত রোগ শনাক্ত করা হয়ে থাকে। অ্যান্টিবায়োটিক ডক্সিসাইক্লিইন এই রোগের অন্যতম ওষুধ। এই রোগের উপসর্গগুলি হল তীব্র মাথাব্যথা, অত্যধিক জ্বর, গা-হাত-পায়ে ব্যথা, সর্দি কাশি, গলা ব্যথা, পিঠে ও বুকে র্যাশ, পেটের সমস্যা। কোনও কোনও ক্ষেত্রে আক্রান্তের চোখ লাল হয়ে যায়।