নিপা সতর্কতায় কনটেনমেন্ট জ়োন কেরলে। —ফাইল চিত্র।
কেরলে কোভিডকালের স্মৃতি ফিরে এল নিপা ভাইরাসের হাত ধরে। নিপার আতঙ্কে কোঝিকোড় জেলায় স্কুল, কলেজ-সহ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার শুরু হয়েছে অনলাইন ক্লাস।
কেরলে ইতিমধ্যে নিপা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ছয়ে। অর্থাৎ, এই মুহূর্তে ছ’জনের দেহে ওই ভাইরাস মিলেছে। নিপায় আক্রান্ত হয়ে দু’জনের মৃত্যুও হয়েছে। কেরল সরকারের তরফে নিপা আতঙ্কের মাঝে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্কুলে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। কোঝিকোড় প্রশাসন জানিয়েছে, আগামী বিজ্ঞপ্তি না আসা পর্যন্ত জেলার কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে না। আপাতত অনলাইনেই ক্লাস চলবে। পরীক্ষাও পিছিয়ে দেওয়া হতে পারে।
কেরলে নিপা আক্রান্তদের প্রত্যেকেই কোঝিকোড়ের বাসিন্দা বলে খবর। যাঁরা তাঁদের সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাঁদেরও নজরে রাখা হয়েছে। সংক্রমণ রুখতে ওই জেলার সাতটি গ্রামকে গণ্ডিবদ্ধ এলাকা (কনটেনমেন্ট জ়োন) বলে ঘোষণা করা হয়েছে। নিপা ভাইরাসে আক্রান্তদের নমুনা সংগ্রহ এবং তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য কোঝিকোড় মেডিক্যাল কলেজে একটি ভ্রাম্যমান পরীক্ষাগার তৈরি করছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি (এনআইভি)।
নিপা ভাইরাসের সংক্রমণের হার কম হলেও মৃত্যুহার তুলনায় অনেক বেশি। কেন্দ্রীয় চিকিৎসা গবেষণা সংস্থা ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ’ (আইসিএমআর) শুক্রবার জানিয়েছে, নিপা ভাইরাসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার ৪০-৭০ শতাংশ। কোভিডে আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার তুলনায় অনেকটাই কম। মাত্র ২-৩ শতাংশ। সংক্রমণ পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার আগেই তাই ব্যবস্থা নিতে চাইছে সরকার।
কোঝিকোড়ে এর আগে ২০১৮ এবং ২০২১ সালে দু’বার নিপা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছিল। ২০১৮ সালে এই ভাইরাসে আক্রান্ত অন্তত ২৩ জনের খোঁজ মিলেছিল। মারা গিয়েছিলেন ১৭ জন।
নিপা আক্রান্ত রোগীদের প্রাথমিক উপসর্গ জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট। তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে এই রোগ উপসর্গবিহীনও হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মূলত পশুদের শরীর থেকে নিপা ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। তবে পচা, বাসি খাবার থেকেও এই ভাইরাস ছড়ায়। নিপার সংক্রমণ হতে পারে মানুষ থেকে মানুষের শরীরেও। এই ভাইরাসে শূকর জাতীয় প্রাণীদের মধ্যেও মড়ক লাগতে পারে। তাতে পশুপালক এবং ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।