কোঝিকোড়ের আয়ানচেরি কনটেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করার পর গ্রামে ঢোকার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। ছবি: পিটিআই।
কেরলে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও এক জন আক্রান্ত হলেন নিপায়। ফলে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ছয়। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, শুক্রবার এক ব্যক্তির শরীরে এই ভাইরাস মিলেছে। তাঁর নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবারও কোঝিকোড়ের এক বেসরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীর শরীরে এই ভাইরাস মেলে। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নতুন আরও এক জন আক্রান্ত হওয়ায় নিপা নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে কেরলে। কোঝিকোড়ের পাশাপাশি কান্নুড়, ওয়েনাড় এবং মলপ্পুরমেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কেন্দ্রের পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ দল কেরলের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, যাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের দ্রুত চিহ্নিত করে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। শুধু তাই-ই নয়, যাঁরা ওই সব রোগীদের সংস্পর্শে এসেছেন, এমন ব্যক্তিদেরও চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু হয়েছে। তাঁদেরও একান্তবাসে পাঠিয়ে পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে।
বুধবারই স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানিয়েছিলেন, নিপায় আক্রান্ত সংস্পর্শে এসেছেন এমন ব্যক্তিদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন ৭০৬ জন। তাঁদের মধ্যে ১৫৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী। তিনি আরও জানিয়েছেন, নিপায় আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা লোকজনদের চিহ্নিতকরণের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। কোনও উপসর্গ ধরা পড়লেই একান্তবাসে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
নিপার যে রূপটি কোঝিকোড়ে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, সেটি বাংলাদেশ রূপ। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এই ভাইরাসের এখনও কোনও প্রতিষেধক তৈরি হয়নি। ফলে সংক্রমণের তুলনায় মৃত্যুর হার বেশি। ফলে এই ভাইরাসকে যাতে দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা যায়, এখন সে দিকেই নজর কেরল সরকারের।
কেরলের পাশাপাশি কর্নাটক এবং রাজস্থানেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রাজস্থান সরকার বৃহস্পতিবার নিপা নিয়ে নির্দেশিকা জারি করেছে। একই সঙ্গে, সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালগুলিকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কর্নাটকেও নিপা ঠেকাতে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
২০১৮ সালে কেরলে নিপার সংক্রমণ ছড়ায়। তার পর ২০১৯ এবং ২০২১ সালেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছিল ভারতের উপকূলবর্তী এই রাজ্যে।