৪৫ শতাংশ কিশোর কিশোরী নিজেদের চেহারা নিয়ে খুশি নয়। প্রতীকী ছবি।
চুরি যাচ্ছে কৈশোর, সেই জায়গা ভরে উঠছে উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগে... যার গালভরা ইংরেজি নাম অ্যাংজ়াইটি। ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর এডুকেশনস রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং তথা এনসিইআরটির সদ্য প্রকাশিত একটি সমীক্ষার রিপোর্টে দেখা গিয়েছে দেশের ৮০ শতাংশের বেশি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের পড়ুয়ারা পরীক্ষার ফল নিয়ে উদ্বেগে ভোগে। যার প্রভাব পড়ছে তাদের মানসিক বিকাশে। ৪৫ শতাংশ কিশোর কিশোরী নিজেদের চেহারা নিয়ে খুশি নয়। ফলে, ধীর লয়ে রাস্তা তৈরি হচ্ছে অবসাদের।
গত কাল প্রকাশিত হয়েছে সমীক্ষাটির রিপোর্ট। ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের মোট ৩ লক্ষ ৭৯ হাজার ৮৪২ জন পড়ুয়া এই সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এনসিইআরটি জানাচ্ছে, ২০২০ সালের জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের তরফে ‘মনোদর্পণ’ বলে মানসিক স্বাস্থ্যের একটি হেল্পলাইন চালু হয়েছিল। তাতে সাড়া মেলায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এই সমীক্ষার। কোভিড অতিমারিতে কেমন ছিল স্কুলপড়ুয়ারা? পারিপার্শ্বিক ঘটনাবলি ও লেখাপড়ার চাপ কী ভাবে প্রভাবিত করেছে তাদের— বিষয়গুলি জানতেই সমীক্ষার অবতারণা।
কোভিড অতিমারির প্রসঙ্গে রিপোর্টে জানা গিয়েছে, ৫১ শতাংশ পড়ুয়া বলেছে অনলাইনে লেখাপড়া করতে তাদের বেশ অসুবিধা হয়েছে। ৪৩ শতাংশ পড়ুয়ার ‘মুড সুইং’-এর প্রবণতা বেড়েছে বিপুল। সাত শতাংশ পড়ুয়া জানিয়েছে, অতিমারিতে ঘরে বন্ধ থেকে তাদের নিজেদের ক্ষতি করতে ইচ্ছে হত। আত্মহত্যার কথাও জানিয়েছে কেউ কেউ।
উঁচু ক্লাসে ওঠার সঙ্গে পড়ুয়াদের মধ্যে অত্যধিক আত্মসচেতনতা ও সংবেদনশীলতাও বেড়েছে। তার প্রাথমিক প্রকাশ বডি ইমেজ ইস্যুজ় বা নিজেকে পছন্দ করতে না পারা। বোর্ডের পরীক্ষার চাপ, কলেজে ভর্তির চিন্তা ও অনাগত ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ‘আইডেন্টিটি ক্রাইসিস’... নিজের পরিচয় হারিয়ে ফেলার ভয়। তাতে ইন্ধন জুগিয়েছে পিয়ার প্রেশার, অর্থাৎ লোকে কী বলবে তার চিন্তা। তবে আশার কথা, ৫১ শতাংশ পড়ুয়া জানিয়েছে যে তারা তাদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে খুশি। ৭৩ শতাংশের দাবি, তারা তাদের স্কুল জীবনে আনন্দেই আছে।
অন্য দিকে, কালই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খোলা চিঠি দিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল জানিয়েছেন দেশের ৮০ শতাংশ সরকারি স্কুলের সঙ্গে আস্তাকুঁড়ের তুলনা করা চলে। শিক্ষক দিবসে প্রধানমন্ত্রীর নামে দেশের সাড়ে ১৪ হাজার স্কুলের নামকরণ প্রসঙ্গেই এই চিঠি। পিএম স্কুলস ফর রাইজিং ইন্ডিয়া (পিএম শ্রী) নামে ওই স্কুলগুলি জাতীয় শিক্ষানীতিকে অনুসরণ করে গড়ে তোলা হবে।