সকালে তখনও মুখ্যমন্ত্রী হরীশ রাওয়ত। দলের দফতরে শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।
মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি ফিরে পেয়ে চওড়া হাসি ফুটেছিল মুখে। পুরো ২৪ ঘণ্টাও কাটল না। তারই মধ্যে হাসিটা মিলিয়ে গেল হরীশ রাওয়তের। তাই বলে নরেন্দ্র মোদীর মুখে হাসি ফোটার কোনও কারণ অবশ্য ঘটেনি।
নরেন্দ্র মোদী সরকারকে বড়সড় ধাক্কা দিয়ে গত কালই দেহরাদূনের মসনদে হরীশ রাওয়তের সরকারকে ফিরিয়ে এনেছিল উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট। আজ মোদী সরকারের আবেদনের ভিত্তিতে হাইকোর্টের ওই রায়ের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। ফলে উত্তরাখণ্ড ফের রাষ্ট্রপতি শাসনে। আপাতত তা আগামী বুধবার পর্যন্ত। তার মধ্যে বিজেপি যাতে পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখল করতে না পারে, সে জন্য শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, ২৭ তারিখ পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত যেন রাষ্ট্রপতি শাসন তোলা না হয়।
হাইকোর্টের রায় আসার পর গত কালই এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মোদী সরকার। কেন্দ্রের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহাতগি আজ সুপ্রিম কোর্টে জানান, কেউই হাইকোর্টের রায়ের প্রতিলিপি হাতে। অথচ কাল রাতেই মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব হাতে তুলে নিয়ে হরীশ রাওয়ত মন্ত্রিসভার বৈঠক করেছেন। ডজন খানেক সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেছেন। এই সূত্রেই সুপ্রিম কোর্ট আগামী ২৬ এপ্রিলের মধ্যে সব পক্ষকে রায়ের প্রতিলিপি দিতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়, এর মধ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন তুলে নিয়ে বিজেপিকে সরকার গড়ার পথ করে দিতে পারে কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্ট এতে নির্দেশ দেয়, ২৭ তারিখের আগে যেন রাষ্ট্রপতি শাসন তোলা না হয়। রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘‘হরীশ রাওয়ত ২৭ তারিখ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। রাষ্ট্রপতি শাসনে রাজ্যপালের মাধ্যমেই রাজ্যপাট চলবে।’’ কুর্সিতে ফিরে পুরো একটা দিনও টিকতে না হরীশ কিন্তু শীর্ষ আদালতের রায়কে স্বাগতই জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘শীর্ষ আদালত গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে চায়। আমরাও সেটাই চাইছি।’’
গোটা ঘটনায় যে বিজেপিরই মুখ পুড়েছে, সেটি নিয়ে বিরোধীরা তো বটেই, এনডিএ-শরিক শিবসেনাও এখন সরব। শিবসেনার বক্তব্য, হাইকোর্টের রায়ে কেন্দ্রের ‘রাজনৈতিক স্বার্থ’ই স্পষ্ট। রাষ্ট্রপতির মর্যাদাও এতে ক্ষুণ্ণ হয়েছে। বিজেপি নেতৃত্বও মানছেন, সুপ্রিম কোর্টই এখন শেষ ভরসা। কিন্তু শীর্ষ আদালতের রায়ও যদি রাষ্ট্রপতি শাসনের বিরুদ্ধে যায় তবে সেটি হবে আরও বড় ধাক্কা। ফলে উদ্বেগেই রইল বিজেপি শিবির।